পশ্চিম মেদিনীপুর: ৮২ বছর বয়সী বলাই রানার মৃত্যু হয় বার্ধক্যজনিত কারণে। কিন্তু মৃত বাবার শরীর আগলে ছেলেকে বসে থাকতে হল দীর্ঘক্ষণ। প্রতিবেশীদের ঘোর সন্দেহ, করোনায় মৃত্যু নয়তো? সংক্রমণের ভয়ে কাছে ঘেঁষল না কেউ। অবশেষে এগিয়ে এলেন মুসলিম প্রতিবেশীরা। হিন্দু ধর্মাবলম্বী বলাইবাবুর মরদেহ ঘাড়ে তুলে নিয়ে শ্মশানে গেলেন মুসলিম ভাইরা। করোনা আবহে এমনই সম্প্রীতির ছবি ধরা পড়ল পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর থানার মামুদপুর গ্রামে।
জানা গিয়েছে, এদিন সকালে ৮২ বছর বয়সী বলাই রানার মৃত্যু হয়। মৃতের ছেলে সুকুমার রানার অভিযোগ, সকাল থেকে বাবার মৃতদেহ বাড়িতেই পড়ে ছিল। সৎকারের জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি। প্রতিবেশীদের ডাক দিলেও কেউ উঁকি মেরেও পর্যন্ত দেখেননি। এই ভাবে সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়েছে। একা বাবার দেহ আগলে বসে থাকেন ছেলে। কীভাবে দাহ করবেন এ নিয়ে চিন্তায় পড়েন।
বিকেলের দিকে এই খবর পান গ্রামের রবিয়াল, মুক্তার সহ মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন। খবর পাওয়া মাত্রই তাঁরা এগিয়ে আসেন দেহ সৎকারে জন্য। এমনকী বৃদ্ধের শেষযাত্রার খাট সাজানো থেকে অন্যান্য দরকারি ব্যবস্থা তাঁরাই করেন। তার পর শ্মশানে গিয়ে সৎকারের কাজও সম্পূর্ণ করেন তারা। এই ঘটনায় পিতৃহারা যুবক জানান, বিপদে যারা এগিয়ে আসেন তাঁরাই তো সত্যিকারের প্রতিবেশী। আর মুসলিম সম্প্রদায়ের ওই মানুষজন বলছেন, প্রতিবেশী হিসেবে শুধু নিজেদের কর্তব্যটুকুই তো করেছি!
আরও পড়ুন: করোনার ভয়ে এগিয়ে এল না কেউ, হিন্দু পড়শির দেহ সৎকার করলেন মুসলিমরা
প্রসঙ্গত, ঈদের দিন ঠিক একই রকমের ঘটনা ঘটেছিল হুগলির পোলবা-দাদপুর ব্লকের বাবনান গ্রামে। সেদিন বছর বাহাত্তরের হরেন্দ্রনাথ সাধুখাঁ নামে হিন্দু প্রতিবেশীর দেহ সৎকারে কাঁধ এগিয়ে দেন মুসলিম যুবকরা।