পশ্চিম মেদিনীপুর: ঝাঁ চকচকে হাসপাতাল। বাইরের রং নীল-সাদা। কিন্তু ভিতরের অবস্থা? দেখে চক্ষু চড়কগাছ হতে হয়। গোটা হাসপাতাল অন্ধকার। বিদ্যুৎ চলে গেলে আলোর জন্য ভরসা একমাত্র মোমবাতি। প্রচণ্ড গরমে অন্ধকারে হাসপাতালের বাইরে স্যালাইনের বোতল হাতে বসে রয়েছেন রোগীরা।
ঘটনাস্থল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতাল। সূত্রের খবর, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার এই গ্রামীণ হাসপাতালের গুরুত্ব অনেকটাই। শুধু চন্দ্রকোনায় নয়, পাশাপাশি গড়বেতা, কেশপুর সহ বেশ কিছু ব্লকের মানুষ এই হাসপাতালে উপর নির্ভরশীল। গুরুত্বপূর্ণ এই হাসপাতালে রয়েছে সিজার ব্যবস্থা। কিন্তু এমনই হাসপাতলে ইলেকট্রিক চলে গেলে অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে যায়। এখন প্রশ্ন হাসপাতালে কি জেনারেটর নেই?
তথ্য অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখা গেল, ১৮ লক্ষ টাকা পাবে একটি ঠিকাদারি সংস্থা। তার উপরে হাসপাতালের নিজস্ব জেনারেটর খারাপ, মেরামত করতে লাগবে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। টাকা কোথায় অত?
খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেল, হাসপাতালে রয়েছে দু’টি জেনারেটর, একটি হাসপাতালের নিজস্ব, অপরটি হাসপাতালে বরাত পাওয়া ঠিকাদারি সংস্থার। তারপরও বিদ্যুৎ চলে গেলে দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতাল চত্বর অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে থাকে। সেই কারণে বিদ্যুৎ চলে গেলে দীর্ঘক্ষণ অন্ধকারেই কাটাতে হয় রোগীদের।
রোগীর পরিবার থেকে শুরু করে এলাকাবাসী জানালেন, বিদ্যুৎ চলে গেলে হাসপাতাল চত্বর অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যায়। স্যালাইন হাতেই হাসপাতালের বাইরে বেরিয়ে আসেন রোগীরা শুধুমাত্র বাতাস পাওয়ার জন্য। এখানেই শেষ নয়, চিকিৎসারত রোগীদের মোমবাতির আলোতেই অনেকসময় থাকতে হয়।
এই সংক্রান্ত সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন চন্দ্রকোনা হাসপাতালে বিএমওএইচ স্বপননীল মিস্ত্রি। তিনি বলেন, ‘আমি নতুন এসেছি। কিন্তু এই হাসপাতালে যে একটি নিজস্ব জেনারেটর সেটি দীর্ঘদিন ধরেই বেহাল হয়ে পড়ে রয়েছে। সেই জেনারেটর মেরামত করতে লাগবে মোটা অঙ্কের টাকা। এমনকী হাসপাতালে যে ঠিকাদারি সংস্থার জেনারেটরের মাধ্যমে আলো দিতেন সেই ঠিকাদারি সংস্থার বকেয়া প্রায় ১৮ লক্ষ টাকার মতো। আর সেই টাকা না পেয়ে ঠিকাদারি সংস্থা বন্ধ করে দিয়েছে জেনারেটর চালানো।’ এর পাশাপাশি স্বপননীল মিস্ত্রি দাবি, সমস্ত বিষয়টি তিনি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিককে জানিয়েছেন।
যদিও, প্রায় এক বছর ধরে এই সমস্যা দেখা দিলেও কোনও উদ্যোগই নেওয়া হয়নি স্বাস্থ্য দফতরের তরফ থেকে। আর এতেই উঠছে একাধিক প্রশ্ন। এখন দেখার এই গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালের বেহাল দশার হাল কবে ফেরে?