পশ্চিম মেদিনীপুর: স্ত্রীকে নিয়ে কর্মসূত্রে বাইরেই থাকতেন পেশায় স্বর্ণশিল্পী। কিছুদিন আগেই বাড়ি ফিরেছিলেন। প্রতিবেশীদের কথায়, এমনিতে তো দু’জনের মধ্যে ভালই ভাবভালবাসা রয়েছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বাড়ি থেকে চিৎকার চেঁচামেচির শব্দ শুনতে পারছিলেন তাঁরা। কিন্তু একেবারেই দাম্পত্য কলহ ভেবে তাঁরা সেই ঝামেলায় নিজেদের জড়াননি। দুপুরের পর থেকে সব স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। সন্ধ্যায় শুরু হয় ফের কথা কাটাকাটি। তারপরই আচমকা গৃহবধূর চিৎকার শুনতে পান তাঁরা। ‘জ্বলে গেল’ বলে চিৎকার করতে থাকেন তিনি। স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে এসে দেখেন, মাটিতে শুয়ে কাতরাচ্ছেন গৃহবধূ। তাঁর শরীরের একাংশ তরল জাতীয় কিছু জিনিসে ঝলসে গিয়েছে। তারপরই বিষয়টি বুঝতে পারেন তাঁরা। ঝগড়ার মধ্যেই স্ত্রীর গায়ে অ্যাসিড ছু়ড়ে মারার অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর থানার বিষ্ণুপুর এলাকার। আহত মহিলা ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয় সূত্রে খবর, শেখ সয়েব আলি ভিন রাজ্যে স্বর্ণশিল্পী হিসাবে কাজ করেন। কয়েকদিন আগেই স্ত্রী শাকিরাকে নিয়ে দেশের বাড়ি ফিরেছেন। বৃহস্পতিবার বিকালে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে প্রচণ্ড ঝামেলা শুরু হয়। উত্তেজিত অবস্থায় স্বামী স্ত্রীকে অ্যাসিড ছুড়ে মারেন।
শাকিরার চিৎকার শুনতে পেয়েই স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে আসেন। তাঁকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে পৌঁছন স্বামীও। ততক্ষণে খবর পেয়ে হাসপাতালে পৌঁছয় দাসপুর থানার পুলিশও।
পুলিশই শাকিরার কলকাতায় বাপেরবাড়িতে খবর দেয়। পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে দাসপুর থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত সয়েবের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে সয়েবকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। সয়েব অবশ্য অ্যালিড ছোড়ার বিষয়টি অস্বীকার করছেন। তাঁর বক্তব্য, দু’জনের অশান্তি হয়েছে ঠিকই, কিন্তু অ্যাসিড ছোড়েননি তিনি। তাঁর কথায়, “ওকে জিজ্ঞাসা করুন না, ওই বলবে কী হয়েছে। ” আক্রান্ত গৃহবধূর সুস্থ হওয়ার অপেক্ষা করছে পুলিশ। তাঁর কাছ থেকেই গোটা বিষয়টি শুনতে চান তদন্তকারীরা।