পশ্চিম মেদিনীপুর: “পশ্চিমবঙ্গকে আন্তর্জাতিক স্তরের উগ্রবাদীরা নিজেদের আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহার করছে।” ঠিক এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)।
সোমবার মেদিনীপুর শহরে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। সম্প্রতি কলকাতায় দুই ব্যক্তির কাছ থেকে বিশেষ ধাতব পদার্থ উদ্ধার হয়। যা দেখে তদন্তকারীরা পরমাণু বোমা তৈরির উপকরণ বলে মনে করেন। এই ঘটনার আতঙ্ক ছড়ায়। ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে প্রশাসনিক স্তরেও উদ্বেগ ছড়িয়েছে।
সেই ঘটনা প্রসঙ্গেই দিলীপ ঘোষ বলেন, “রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গকে আন্তর্জাতিক স্তরের উগ্রবাদীরা নিজেদের আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহার করছে।” রাজ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। তাঁর কথায়, “পুলিশ সমস্ত বিষয়টিকে হালকাভাবে নেয় আর এর ফলেই বাংলাদেশ থেকে উগ্রবাদীরা এসে পশ্চিমবঙ্গে নিজেদের জাল বিছোয়।”
প্রসঙ্গত, গত বুধবার রাতে কলকাতার তিন নম্বর মতিলাল কলোনি থেকে দু’জন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে সিআইডি। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে আড়াইশো গ্রামের বেশি ধাতব পদার্থ। প্রাথমিকভাবে সিআইডি মনে করছেন, পরমাণু বোমা তৈরির অন্যতম উপকরণ ক্যালিফোর্নিয়াম নামক এই ধাতুটি।
আন্তর্জাতিক বাজারে এক গ্রামের দাম প্রায় ১৭০ কোটি টাকা। ধৃতদের কাছ থেকে মোট চারটি ধাতুর টুকরো উদ্ধার করা হয়েছে। তার মধ্যে ক্যালিফোর্নিয়াম ছাড়াও ইরিডিয়াম আছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। ধৃতদের নাম শৈলেন কর্মকার এবং অসিত ঘোষ। তাঁরা দুজনেই হুগলি সিঙ্গুর এবং পোলবার বাসিন্দা।
তবে এই ধরনের তেজস্ক্রিয় মৌল কীভাবে তাঁদের কাছে এল, সমস্ত বিষয়ে তদন্ত করছে সিআইডি তদন্তকারী আধিকারিকেরা। প্রতারণা-সহ অ্যাটমিক এনার্জি ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্তকারী আধিকারিকেরা মনে করছেন, কোন গবেষণাগার থেকে এই তেজস্ক্রিয় ধাতু চুরি করে আনা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে সিআইডি তদন্তকারী আধিকারিকেরা জানতে পেরেছেন, কর্ণাটক থেকে এই ধাতব পদার্থগুলো নিয়ে আসা হয়েছে।
ধৃত অসিতের বাড়িতে যায় পোলবা থানার পুলিশ। অসিতের স্ত্রী রীনা ঘোষ জানান, জমিজমা, চাষ নিয়েই থাকতেন তাঁর স্বামী। সম্প্রতি জমি বেচাকেনার কাজে যুক্ত হন। আট দশ দিন আগে তারকেশ্বর যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বের হন। তারপর আর বাড়ি ফেরেননি।
ফোনে তাঁর সঙ্গে শেষ কথা হয় গ্রেফতার হওয়ার এক দিন আগে। বুধবার থেকে আর কোন কথা হয়নি।তিনি মাঝে মধ্যে জমি কেনাবেচার জন্য বেরোতেন, তবে এমন ঘটনা আগে ঘটেনি। সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকেই স্বামীর গ্রেফতারির খবর জানতে পারেন রীনা। এলাকায় সাধারণ ছাপোষা মানুষ হিসাবেই পরিচিত আসিত। তবে ধৃতদের সঙ্গে কোনও সংগঠনের যোগ রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। ধৃতরা আদৌ ওই ধাতব পদার্থ কোথা থেকে নিয়ে এসেছিলেন, তাও জানার চেষ্টা চলছে। আরও পড়ুন: বয়স ষাট পেরিয়েছে, স্রেফ একটা কথাতেই বহু তরুণীকে মুগ্ধ করেছেন! হোটেলেই কাজ হাসিল…