পশ্চিম মেদিনীপুর: তমলুক ঘাটাল কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের হল। মামলা হতেই জেলা জুড়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। কারণ এই দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে তমলুক ঘাটাল কেন্দ্রীয় কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের সম্পাদক কৌশিক কুলভির তথা দাসপুর ১ নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পাদক তিনি। অপর দিকে এলাকার তিনি দাপুটে তৃণমূল নেতা। আর সেই কৌশিক কুলভির ভাইপো শ্রমিক কুলভি দাসপুর গৌরা শাখায় ফিল্ড অফিসার হিসাবে চাকরি পেয়েছেন ওই সময়ে। আর এ হেন তৃণমূল নেতার নাম জড়াতে শুরু হয়েছে চরম রাজনৈতিক তরজা।
উল্লেখ্য, ২০১৯ -২১ বর্ষে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছিল সেখানে জানানো হয়েছিল, ৫২ টি শূন্য পদ রয়েছে। কিন্তু ৫২ টি নিয়োগ পদের জায়গায় দেখা গিয়েছে, দ্বিগুণ ছাড়িয়েছে নিয়োগ সংখ্যা। আর সেই সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১৩৪ জনে।
আরও অভিযোগ, আবেদন না করেও অনেকে চাকরি পেয়েছেন। এমনকি মেধাতালিকায় নাম না থেকেও চাকরি পেয়েছেন, এমন সংখ্যাও নেহাতই কম নয়। এমনই অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে ফলকনামা জমা পড়েছে। মামলার শুনানি রয়েছে আগামী সপ্তাহে। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
এ বিষয়ে ঘাটালের বিজেপি বিধায়ক শীতল কপাটের বক্তব্য, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে এসেছি, তৃণমূলের নেতারা নিজেদের ক্ষমতায় থাকার ফলে ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন। বেআইনিভাবে চাকরি করছেন তার পরিজনেরা। ঘাটাল ব্লকের এক তৃণমূল নেতার নাম না করে সমবায়ে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ তুলছেন বিজেপি বিধায়ক। এমনকি এরকম একাধিক তথ্য আমাদের হাতেও আছে।”
অপরদিকে দাসপুরের সিপিএম নেতা গুণধর ঘোষের দাবি, “২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই শুরু হয়েছে এই সমস্ত দুর্নীতি, শুধু নিয়োগ দুর্নীতি নয়। সমবায়ের লোন করে দেয়ার নামেও একাধিক দুর্নীতির সাথে জড়িত ওরা। এমনকি যে সমস্ত শাখা সমবায় সমিতি গুলি রয়েছে, সেখানে নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছে।”
অভিযুক্ত কৌশিক কুলভির সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ক্যামেরার সামনে কিছু বলেননি। TV9 বাংলাকে ফোনে তিনি বলেছেন, “২০১৯ সালে আশিস মণ্ডল এই নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে একটি অভিযোগ করেছিলেন, বিষয়টি আদালতের প্রধান বিচারপতির কাছে বিচারাধীন। এই বিষয়ে আমি কিছু বলব না। বিচার ব্যবস্থার ওপর আমার পূর্ণ আস্থা আছে।”
যদিও এ বিষয়ে কোনও তৃণমূল নেতা ক্যামেরার সামনে মুখ খোলেননি। জেলা জুড়ে শুরু হয়েছে জোর চর্চা।