মেদিনীপুর : বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের অভিযোগ। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মাসখানেক আগেই গ্রেফতার হয় খড়গপুর টাউনের এক যুবক। তারপর শ্রীঘরে যেতেই বোধোদয়। অবশেষে আদালতের নির্দেশে, মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে অভিযুক্ত যুবক ও অভিযোগকারিণীর শুভবিবাহ সম্পন্ন হল সোমবার। উল্লেখ্য, খড়্গপুর টাউন থানা এলাকার এক তরুণীর সঙ্গে দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্কে জড়ায় ওই এলাকারই এক যুবক। যুবকের সঙ্গে সম্পর্কের মাঝে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে ওই তরুণী। তবে এরপরই বিয়ের প্রস্তাবে বেঁকে বসে যুবক। অভিযোগ, রীতিমতো জাত তুলে গালিগালাজ করে বিয়ের প্রস্তাব কার্যত নাকচ করে দেন অভিযুক্ত যুবকের বাবা।
ঘটনার ওই যুবকের বিরুদ্ধে খড়্গপুর টাউন থানায় বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের অভিযোগ দায়ের করে এক তরুণী। তদন্তে নেমে ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়। তরুণীকে অশ্রাব্য ভাষায় জাত তুলে গালি দেওয়ার অভিযোগে POA আইনে গ্রেফতার করা হয় যুবকের বাবাকেও। আদালতের নির্দেশেই জেল হেফাজত হয় অভিযুক্ত যুবক ও তার বাবার। প্রথমে জামিনের আবেদন করা হলেও আদালত খারিজ করে দেয় সেই আবেদন। এরপরে অন্তঃসত্ত্বা তরুণীকে ফিরে পেতে শ্রীঘরে বসেই বোধোদয় হয় যুবকের। আইনজীবী মারফত গোটা বিষয়টি যুবকের তরফে জানানো হয় মেদিনীপুর আদালতে। যুবকের আবেদন পেয়ে মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের কর্তাদের বিবাহের আয়োজনের নির্দেশ দেয় আদালত।
সেইমতো বৃহস্পতিবার দুপুরে মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারেই আয়োজন করা হয় বিবাহের। জেল পুলিশকর্তা ও আইনজীবীদের উপস্থিতিতে সম্পন্ন হয় বিবাহ। সামাজিক বিবাহের পরেই রেজিস্ট্রি ম্যারেজ অ্যাক্টেও ইতিমধ্যেই বিবাহের আবেদন জানানো হয়েছে নবদম্পতির তরফে। গোটা ঘটনা নিয়ে খড়্গপুরের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক (SDPO) দীপক সরকার জানান, তরুণীর অভিযোগ পেয়েই গ্রেফতার করা হয় ওই যুবককে। তদন্তে নেমে সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে গ্রেফতার করা হয় তার বাবাকেও।
অভিযুক্তের আইনজীবী মাধুরী ঘোষাল জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশে সোমবার বিবাহ সম্পন্ন হয়েছে। সংশোধনাগারের তরফে প্রয়োজনীয় নথি জমা দেওয়া হবে আদালতে। অন্যদিকে ঘটনার কথা কার্যত স্বীকার করে নিচ্ছেন সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ। মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের এক কর্তা জানান, আদালতের নির্দেশে সমস্ত রকমের আয়োজন করা হয় সংশোধনাগারের ভিতর। আইনজীবীদের উপস্থিতিতে বিবাহ সম্পন্ন হয়েছে। পরবর্তী শুনানির আগে সমস্ত এ বিষয়ে জানানো হবে আদালতে। সংশোধনাগার থেকে ছাড়া পেয়ে শান্তিতে সংসার করাই এখন তাঁদের লক্ষ্য।