মেদিনীপুর: সকালবেলা মুরগির খাবার নিয়ে সেতুর উপর দিয়ে যাচ্ছিল গাড়ি। আচমকাই হুড়মুড়িয়ে বসে পড়ে ব্রিজটি (Bridge)। বরাত জোরে রক্ষা পান গাড়ির চালক। এই ঘটনার পরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার লোকজন। রবিবার মেদিনীপুর জেলার ডেবরা ব্লকের ৬ নম্বর জলিমান্দা রামপুরা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এলাকার লোকজনের ক্ষোভ, বারবার এ নিয়ে তাঁরা স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েছিলেন। তবে তাতে কোনও কাজ হয়নি। তাঁদের আরও দাবি, এখন আর ব্রিজটি সারাই করে লাভ হবে না। নতুন ব্রিজের দাবি তোলেন তাঁরা। যদিও বিডিও জানান, আপাতত অস্থায়ীভাবেই ব্রিজটি সারানো হচ্ছে। পরে সেচ দফতর স্থায়ী বন্দোবস্ত করবে।
ডেবরার রামপুরা খালের ওপর এই ব্রিজ বহু প্রাচীন। এলাকার বাসিন্দা দাশু গুছাইত বলেন, “১৯৮০-৮৫ সালে এই ব্রিজ তৈরি হয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে এর কোনও কাজ হয়নি। আমরা বিডিও, জেলা পরিষদ- কাউকে জানাতে বাদ রাখিনি। লিখিত অভিযোগও করি। সরকারের দৃষ্টি আকর্ষন করতে চেয়েছিলাম আমরা। কারণ, এই ব্রিজ সাত-আটটা গ্রামের যোগাযোগের পথ। এমনকী পিংলারও কিছু মানুষ এই ব্রিজ ব্যবহার করেন।” এলাকার লোকজন জানান, তাঁরা সতর্কতামূলকভাবে যান চলাচল বন্ধ রাখারও উদ্যোগ নেন।
অভিযোগ, তারপরও কিছু ভারী গাড়ি অন্ধকারে যাতায়াত করত। সকালেও যেত তারা। এরপরই রবিবার ঘটে বিপত্তি। মুরগির খাবার নিয়ে একটি গাড়ি যাচ্ছিল, তাতেই এই ঘটনা ঘটে। এলাকার লোকজন জানান, এই ব্রিজ ব্যবহার করতে না পারলে এতগুলো গ্রামের ক্ষতি। শরীর খারাপ হলে কোনও রোগীর যাওয়ার পথটুকুও বন্ধ। খুব দ্রুত যেন নতুন ব্রিজ তৈরি হয়। নাহলে তাঁদের জীবনের ঝুঁকি দ্বিগুন হয়ে যাবে। ঘটতে পারে দুর্ঘটনাও।
হোদলা বুথের পঞ্চায়েত সদস্য অরবিন্দ জানার কথায়, “কয়েকদিন আগে ব্রিজটা বসে গিয়েছিল। তখনই পঞ্চায়েত অফিসে এ নিয়ে বৈঠক করি। যাতে পুরোপুরি ক্ষতি না হয় ব্রিজটার তার জন্য তা ঘিরে রাখারও ব্যবস্থা করা হয়। তবে রাতের দিকে ভারী গাড়ি যাতায়াত করায় ব্রিজটার ক্ষতি হচ্ছিল। এরইমধ্যে শনিবার রাতে বৃষ্টির কারণে আরও বসে যায় ব্রিজটি। রবিবার সকাল ৯টা ১০টা নাগাদ গাড়ি যাচ্ছিল, সেই সময় পুরো হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে।”
এ নিয়ে ডেবরার বিডিও শিঞ্জিনী সেনগুপ্ত বলেন, “শুনেছি এরকম ঘটনা ঘটেছে। ইরিগেশনের তৈরি করা ব্রিজ এটা। বহু পুরনো। মানুষের যাতে এখন কোনও সমস্যা না হয়, তার জন্য জরুরি ভিত্তিতে ব্লক ও অঞ্চলের তরফে সারাই করিয়ে দিচ্ছি। আজই সেটা হচ্ছে। স্থায়ীভাবে যাতে এই সমস্যার সমাধান হয় তার জন্য সেচ দফতরকেও জানিয়ে রাখছি।”