পশ্চিম মেদিনীপুর: অবশেষে মাথার উপর স্থায়ী ছাদ পেলেন দাসপুরের পান্তি পিসি। ‘সৌজন্যে’ এলাকার সাংসদ দেব। আমফানে সর্বস্ব খুইয়েছিলেন মেদিনীপুরের দাসপুর-২ ব্লকের সোনাখালির বাসিন্দা শিখা চক্রবর্তী। ষাটোর্ধ্ব এই মহিলা এলাকায় সকলের পান্তি পিসি। এদিন নতুন বাড়ির পুজো করলেন পান্তি পিসি, মঙ্গল ঘট দোরে রেখে হল গৃহপ্রবেশ। ঘর সাজালেন গাঁদার মালায়। বাড়ির দেওয়ালে ঝলমল করছে দেবের পোস্টার।
২০২০ সালের মে মাস। বিধ্বংসী সুপার সাইক্লোন আমফান তছনছ করে দিয়েছিল দক্ষিণবঙ্গের একটা বড় অংশ। উপকূলের জেলা-সহ মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম তছনছ করে। সেই ঝড়েই উড়ে গিয়েছিল শিখাদেবীর কাঁচা বাড়ি। যেটুকু ছিল ভাঙাচোরা, তাতেই কোনওমতে দিন গুজরান করছিলেন তিনি। তবুও কোনও এক অজ্ঞাত কারণেই স্থানীয় প্রশাসনের তা নজরে আসেনি কোনওদিনই। পান্তি পিসি ভগ্নপ্রায় বাড়ি আঁকড়েই পড়ে ছিলেন। রীতিমত প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে দিন কাটছিল তাঁর।
দেবের প্রথম পরিচয়, তিনি একজন অভিনেতা। টালিগঞ্জের স্টুডিয়োপাড়া থেকেই তাঁর লাইম লাইটে উঠে আসা। অগণিত ভক্ত তাঁর ছবির। সেই জনপ্রিয়তাতে ভর করেই রাজনীতির ময়দানে নামা। এখন তিনি রাজনীতিক হিসাবেও বেশ অভিজ্ঞ। এই দেবই একেবারে সিনেমার ‘সুপারহিরো’র মতো অবতীর্ণ হন বৃদ্ধা পান্তি পিসির জীবনে।
তাঁর অসহায়তার কথা জানতে পেরে উদ্যোগ নেন দেব। মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। তিনি জানান, ১ লক্ষ টাকা দেবেন এই মহিলার বাড়ি তৈরির জন্য। তবে দেব যেমনভাবে বাড়ি তৈরির কথা বলেন, তাতে খরচ ৬ লক্ষ টাকা পড়ে যাচ্ছিল। তাতে অবশ্য পিছু হঠেননি সাংসদ। ১ বছর ৬ মাস ধরে ৬ লাখি এই বাড়ি তৈরি হয় পান্তি পিসির জন্য। এক্কেবারে পাকা বাড়ি। সেই বাড়িরই গৃহপ্রবেশ হল সোমবার। পান্তি পিসির উদ্যোগেই বাড়িতে লাগানো হল দেবের ছবি।
এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঘাটালের মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাস। তিনি জানান, দেবের আসার ইচ্ছা ছিল। তবে অন্য কাজ থাকায় আসতে পারেননি। তবে সাংসদ প্রতিনিধি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন রামপদ মান্না। রামপদ মান্না বলেন, “দেব আসার কথা থাকলেও তিনি আসতে পারেননি। তবে উনি জানিয়েছেন, একবার এসে ঘুরে যাবেন। এই বাড়ি দেখে যাবেন।”