কলকাতা: আজ রাইসিনার রেস। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভাতেও সকাল থেকে সাজো সাজো রব। সকাল দশটার কিছু আগে বাসে বিজেপি বিধায়করা বিধানসভায় উপস্থিত হন। তবে অন্যান্য দিনের তুলনায় এদিনের বিশেষত্বটা বোঝাতে তাঁরা গেরুয়া উত্তরীয়র বদলে আদিবাসীদের পাঞ্জী পরে বিধানসভায় এসেছেন। প্রত্যেকের গলাতেই হলুদ রঙা পাঞ্জী। এই প্রতিবেদনটি যখন প্রকাশিত হচ্ছে, তখন বিধানসভায় ভোটদানের পর্ব শুরু হয়ে গিয়েছে। ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। কপালে তাঁর গেরুয়া তিলক আর গলায় পাঞ্জী। তবে তিনি বললেন, “ভোটের লাইনে কিচ্ছু বলব না।” তাঁর সামনেই ছিলেন বিজেপি বিধায়ক হিরণ্ময় চট্টোপাধ্যায় ।
ভোটের লাইনে ছিলেন অগ্নিমিত্রা পল। তিনি বলেন, “যে কোনও শুভ কাজ সকাল সকাল করতে হয়। আমরা সকাল সকাল মায়ের কাছে গিয়ে পুষ্পাঞ্জলি দিই। এটা পুষ্পাঞ্জলি দেওয়া। প্রথম জনজাতি মহিলা তথা ভারতের দ্বিতীয় মহিলা রাষ্ট্রপতি হতে চলেছেন। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।” বিজেপির ৭০ জন বিধায়ক এক সঙ্গে লাইনে দাঁড়িয়ে বিধানসভায় ভোট দিলেন।
যদিও এই বিষয়টিকে কটাক্ষ করেছেন ফিরহাদ হাকিম। তাঁর বক্তব্য, “বিজেপি বিধায়করা একে অপরকে বিশ্বাস করেন না। তাই একসঙ্গে আসতে হল।” এর প্রত্যুত্তরে অগ্নিমিত্রা বলেছেন, “যে যেরকম ভাবে, সে রকমই অন্যরকমকে ভাবে। তাঁদের মধ্যেই সন্দেহের বাতাবরণ রয়েছে। এটাই ভাবা তাঁর পক্ষে স্বাভাবিক।”
বিজেপি বিধায়ক চন্দনা বাউরি বলেন, “ভারতের ইতিহাসে নজিরবিহীন দিন আজ। আদিবাসী মহিলা প্রথম রাষ্ট্রপতি হতে চলেছেন। তাঁকে সম্মান জানাতেন এই সাজ।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সার্বিকভাবে যা চিত্র, তাতে বিরোধী প্রার্থীর থেকে ভোট শতাংশে অনেক এগিয়ে থাকবেন এনডিএ পদপ্রার্থী। এই নির্বাচন বাংলার ক্ষেত্রে অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ। গতবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সেখানে বিধানসভায় বিজেপি প্রার্থী ছিলেন ৩ জন বিধায়ক। কিন্তু রামনাথ কোবিন্দ ভোট পেয়েছিলেন ১১ টি। এবার বিজেপি বিধায়কের সংখ্যা ৭০। বিজেপি শিবিরের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তারা ৮০ টা ভোট পাবে। অর্থাৎ বারবার বিজেপির পক্ষ থেকে একটা ‘ক্রস ভোটিং’ সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। ২০২৪ এর নির্বাচনের আগে এই ভোট যেন একটা মহড়া। তেমনটাই মত বিশ্লেষকদের। এনডিএ যেমন ঘর গোছাতে ব্যস্ত, তেমনি বিরোধী শিবিরও পাল্লা দিয়ে নেমে পড়েছে ঘর গোছাতেই। এরকম অনেক বিজেপি বিধায়ক রয়েছেন, যাঁরা খাতায় কলমে বিজেপি বিধায়ক, কিন্তু তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তাঁরা কী করেন, সেটাও দেখার।