কালনা: বিজেপি করার ‘অপরাধে’ নাম নেই আবাসের তালিকায়, অভিযোগ কালনা ২ নম্বর ব্লকের পূর্ব সাতগাছিয়া পঞ্চায়েতের শ্বাসপুর পশ্চিম পাড়ার বাসিন্দা মণ্ডল পরিবারের । এমনকি আগেও একবার তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও মেলেনি ঘর বা টাকা। অসহায় পরিবারের দাবি, স্থানীয় তৃণমূল নেতা নাকি সরাসরি বলেই দিয়েছেন, বিজেপি করার জন্যই মিলবে না ঘর। ঘর পাওয়ার আশায় স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে প্রশাসনের দরবারে ঘুরে চলেছে পরিবার। এখনও কোনও সুরাহা নেই। অগত্যা, ত্রিপল টাঙানো ঝুপড়িতেই চলছে দিন যাপন। পঞ্চায়েতের সাফাই, সবটাই প্রশাসন দেখছে। প্রশাসন ব্যবস্থা করবে। যদিও এই বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি BDO।
পশ্চিম পাড়ার বাসিন্দা বছর ছিয়াত্তরের সুনীল মণ্ডল ও তাঁর স্ত্রী সাবিত্রী। ছেলেরা থাকেন আলাদা। সুনীল মন্ডল আগে মুটের কাজ করতেন। বয়সের ভারে এখন তিনি কাজ করতে পারেন না। বাধ্য হয়েই স্ত্রী দিন মজুরের কাজ করে সংসার চালান। এক চিলতে মাটি ও টিনের চালের বাড়িতে বাস করেন। অর্থাভাবে মেরামত না করতে পারায় ভেঙ্গে পড়ছে মাটির দেওয়াল। বিষাক্ত সাপের সঙ্গে চলছে সহবাস। চাল ফুটো হয়ে জল পড়ে ঘরে। যে কোন সময়ই ভেঙে পড়তে পারে ঘর। এমনি বিপজ্জনকভাবে এই ঘরে বসবাস করেন বৃদ্ধ বৃদ্ধা।
সুনীল মণ্ডলের অভিযোগ, তাঁরা বিজেপির সক্রিয় কর্মী। বিজেপি দলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন তাঁরা। এই কারনেই আবাস তালিকায় নাম নেই তাঁদের। আগেও ঘর পাওয়ার তালিকা থেকে বাদ গেছে নাম। ঘর চাইলে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব সরাসরি জানিয়ে দেয় বিজেপি করার জন্য মিলবে না ঘর।
এ বিষয়ে পূর্ব সাতগাছিয়া পঞ্চায়েতের প্রধান হরেকৃষ্ণ মণ্ডলের দাবি, “ওদের বাড়ির অবস্থা খুবই খারাপ, সেটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু শুনলাম ও নাকি দাবি করেছে, আমার কাছে এসেছিল। আমি আজেবাজে কথা বলেছি। কিন্তু ওরকম কোনও কথাই হয়নি। যদি বলে তালিকা থেকে নাম বাদ দিয়েছে, তাহলে ইনকোয়ারি তো পঞ্চায়েত সদস্যরা করেনি, সেটা সরকারি কর্মচারীরাই করেছেন।”
বিষয়টিকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। বিজেপির কাটোয়া সাংগঠনিক সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এটা বাংলার নগ্ন চিত্র। বিজেপি করে বলে, যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও তারা বাড়ি পাবে না। অথবা টাকা দিতে পারিনি, তাই বাড়ি পাবে না।” আপাতত রাজনৈতিক টানাপোড়েনে বিষাক্ত সাপ-পোকাকামড়ের সঙ্গে সেই ঝুপড়িতেই দিনযাপন করছে মণ্ডল দম্পতি।