বর্ধমান : মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প মিষ্টি হাব আপাতত খুলছে না। প্রশাসনের নির্দেশ মতো নির্ধারিত সময়ে খোলা সম্ভব নয় মিষ্টি হাব। সাফ জানিয়ে দিলেন মিষ্টি হাবের ব্যবসায়ীরা। বৃহস্পতিবার মিষ্টি হাবের দোকানদারেরা জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করে এইকথা জানিয়েছেন। দোকান মালিকরা জানাচ্ছেন, অতীতের থেকে শিক্ষা নিয়ে তাঁদের উপলব্ধি, এই মূহুর্তে মিষ্টি হাব খোলার মতো পরিবেশ তৈরি হয়নি।
২০১৭ সালে পূর্ব বর্ধমানের বাম চাঁদাইপুরে উদ্বোধন হয়েছিল মিষ্টি হাব। তারপর প্রায় চার বছর ধরে বন্ধ। ক্রেতা আসছে না, সেই কারণে দেখিয়ে দোকানদারেরা মিষ্টি হাবের দোকান বন্ধ করেছিলেন। প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর ধমক খেয়ে জেলা প্রশাসন যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ফের মিষ্টি হাব খোলার পরিকল্পনা নেয়। গত ৬ মে তড়িঘড়ি প্রশাসনিক বৈঠক হয় জেলাশাসকের দফতরে। জেলা শাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা, পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন, জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া, বিধায়ক নিশীথ মালিক, জাতীয় সড়কের প্রতিনিধি, পরিবহন দফতরের আধিকারিক সহ প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের আধিকারিক এবং মিষ্টি হাবের দোকানদারদের নিয়ে এই বৈঠক হয়।
সেই বৈঠকে ঠিক হয় মিষ্টি হাবে সরকারি বাস দাঁড় করানো হবে। পাশাপাশি বেসরকারি বাস মালিকদের কাছে বাস থামানোর জন্য অনুরোধ করা হবে বলেও আলোচনা হয়। জাতীয় সড়ক থেকে মিষ্টি হাবে বাস ঢোকার জন্য কাটিংয়ের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে বলে জেলাশাসক জানিয়েছিলেন। দোকানদারেরাও দোকান পুনরায় খুলবে বলে জানিয়েছিলেন।
কিন্তু আজ দোকানদাররা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাতে মিষ্টি হাব পুনরায় খোলার আশা ফের ক্ষীণ হয়ে যাচ্ছে। দোকানদারেরা জানাচ্ছেন, এর আগেও দুবার বাস দাঁড় করানোর চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু জোর করে বাস দাঁড় করিয়েও যে ক্রেতা আসবে সেটা ভাবা যাচ্ছে না। তাঁরা জানাচ্ছেন, এই মুহূর্তে এই মিষ্টি হাব থেকে সেফ ল্যাব, প্রিজার্ভ প্যাকেজিং-এর উপর জোর দেওয়া উচিত। দোকান পুনরায় খুললে আবারও লোকসানের আশঙ্কা রয়েছে বলে মমে করছেন ব্যবসায়ীরা। এই মর্মে বৃহস্পতিবার দোকানদারেরা জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের অসুবিধার কথা জানান। প্রশাসন চাইলে তাঁরা দোকান ফেরানোর জন্যও প্রস্তুত বলে জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
দোকানদারদের পক্ষে প্রমোদকুমার সিং জানান, এ ভাবে দোকান চালাতে তাঁরা অপারগ। তাঁর দাবি, খদ্দের হয়নি, জোর করে দোকান খুলে বা বাস দাঁড় করিয়ে আগেও চেষ্টা হয়েছিল। তাঁদের পরামর্শ, এখানে মিষ্টি রফতানি ও গবেষণার কাজ হোক। তাতে মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্ন সার্থক হবে বলে মনে করেন তিনি। তাঁরা দোকান ফেরত দিতেও সম্মত।