কালনা: জীবিত মানুষের নামে বেরিয়ে গিয়েছে মৃত্যু শংসাপত্র। আর যিনি মৃত, তিনি এখনও সরকারিভাবে খাতায় কলমে জীবিত। এমনই এক আজব বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। বিষয়টি নজরে এসেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষেরও। প্রশাসনের সঙ্গে কথাবার্তা বলে বিষয়টি সংশোধন করার চেষ্টা করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কীভাবে ঘটল এমন ঘটনা? জলজ্যান্ত একজন মানুষের নামে কীভাবে বেরিয়ে গেল মৃত্যু শংসাপত্র? আর যিনি মারা গিয়েছেন, যাঁর দেহ সৎকার হয়ে গিয়েছে, তিনি এখনও খাতায় কলমে জীবিত কীভাবে! খোঁজখবর নিতে গিয়ে জানা গেল, তথ্যের অদল-বদলের কারণেই এই বিপত্তি।
ঠিক কী ঘটেছে কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে? জানা যাচ্ছে, গত মাসে শান্তিপুর থানা এলাকার নৃসিংহপুর গ্রামে বোনের বাড়িতে ঘুরতে এসেছিলেন রুনু মাঝি। বাড়ি হুগলির ধনিয়াখালি থানা এলাকায়। বোনের বাড়ি ঘুরতে গিয়ে হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। হৃদরোগে আক্রান্ত হন। তড়িঘড়ি তাঁকে কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে আসেন রুনু মাঝির বোন আলপনা সর্দার। হাসপাতালে ভর্তি করানোর সময় রোগীর নথিপত্র জমা দিতে গিয়ে তাড়াহুড়োয় ভুলবশত নিজের নথিপত্র দিয়ে ফেলেন আলপনাদেবী। এখান থেকেই শুরু হয় বিপত্তি, যদিও এতদিন কিছু টের পাননি তাঁরা। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১২ অগস্ট মৃত্যু হয় রুনু মাঝির। এরপর হাসপাতাল থেকে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় হুগলির বাড়িতে। তারপর সেখান থেকে স্থানীয় শ্মশানে নিয়ে গিয়ে দেহ সৎকারও করা হয়।
কী ভুল হয়েছে, তা আলপনা সর্দার টের পান কিছুদিন আগে, যখন রুনু মাঝির আত্মীয়রা কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে মৃত্যু শংসাপত্র নিতে যান। আর তখনই সকলের একেবারে চক্ষু চড়কগাছ। মৃত্যু শংসাপত্রে রুনু মাঝির পরিবর্তে নাম লেখা আলপনা সর্দারের, যিনি এখনও জীবিত। এমন অবস্থায় বিপত্তি কাটাতে রুনু মাঝির বাড়ির এলাকার স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য মারফত ও গ্রামবাসীদের মারফত লিখিতভাবে জানানো হয় যে রুনু দেবী প্রয়াত হয়েছেন এবং শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে।
কালনা হাসপাতালের সুপার চিকিৎসক চন্দ্রকান্তি মাইতিও জানাচ্ছেন, রোগীর পরিবর্তে তাঁর বোনের নথিপত্র জমা হওয়ার কারণেই এই বিপত্তি ঘটেছে। এই সমস্যা মেটানোর জন্য প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।