Katwa News: ১০০ থেকে কমে ৯, চলে যাচ্ছে পড়ুয়ারা! বন্যার কারণে সংশয়ে গ্রামের স্কুলের ভবিষ্যৎ
Katwa News Today: বলে রাখা প্রয়োজন, এই বেগুনকোলা গ্রামকে দ্বীপের মতো চারদিক দিয়ে ঘিরে রেখেছে অজয় নদ। যার জেরে প্রতি বছরই নদীর জল বাড়লে বিপদ বাড়ে গ্রামে। ডুবে যায় বন্যায়। গোটা বছর গ্রামের বাইরে যেতে হলে এক মাত্র যানবাহন নৌকা। কিন্তু রাতবিরেতে কেউ অসুস্থ হলে, সেই নৌকাও আর মেলে না। এদিকে ঠিক মতো রাস্তা না থাকায় ঢুকতে পারে না অ্যাম্বুল্যান্স।

কাটোয়া: জনশূন্য হয়ে যাচ্ছে গোটা গ্রাম। একে একে সবাই চলে যাচ্ছে অন্য এলাকায়। যে সড়কে এক সময় দিনভর থাকত কোলাহল। সেটাই এখন খাঁ খাঁ করছে। এ যেন উনিশ শতকের গ্রামবাংলার কথা। যা ফুটে উঠেছিল শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বইয়ে। সেই গ্রামবাংলা ‘বেঁচে’ রয়েছে আজও। ‘বেঁচে’ রয়েছে তাদের শূন্য়তা।
ঘটনা কেতুগ্রামের ২ নম্বর ব্লকের বেগুনকোলা গ্রামের। সেখানে বন্য়ার জেরে বেড়েছে দুশ্চিন্তা। গ্রাম ছেড়ে চলে যাচ্ছেন বহু মানুষ। বছরের অনেকটা সময় এই গ্রাম ডুবে থাকে অজয় নদের জলে। বন্ধ হয়ে যায় যোগাযোগ ব্যবস্থা। ফলত ভুগতে হয় সাধারণ গ্রামবাসীদের। তৈরি হয় নাজেহাল পরিস্থিতি। যা দিনে দিনে অতিক্রম করছে সহ্য ক্ষমতা। আর তারপর গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে একটার পর একটা পরিবার। গ্রাম ধীরে ধীরে জনশূন্য় হয়ে পড়ায় প্রভাব পড়েছে স্থানীয় স্কুলেও।
এই গ্রামের একমাত্র স্কুল বেগুনকোলা অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কমছে পড়ুয়ার সংখ্যা। আগে যেখানে পড়ত শতাধিক খুদে খুদে পড়ুয়া, আজ তা কমতে কমতে এসে ঢেকেছে ৯ জন পড়ুয়ায়। এদিন ওই প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক শান্তনু রায় চৌধুরী বলেন, ‘এখন আমাদের স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্য়া ৯ জন। শিক্ষক-শিক্ষিকা দু’জন। বন্যা পরিস্থিতির কারণে প্রতিবারই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। তাই বেশিরভাগ পরিবারই গ্রামছাড়া। জীবন বাঁচাতে নদীর ওই পাড়ে উঠে গিয়েছেন তাঁরা।’
বলে রাখা প্রয়োজন, এই বেগুনকোলা গ্রামকে দ্বীপের মতো চারদিক দিয়ে ঘিরে রেখেছে অজয় নদ। যার জেরে প্রতি বছরই নদীর জল বাড়লে বিপদ বাড়ে গ্রামে। ডুবে যায় বন্যায়। গোটা বছর গ্রামের বাইরে যেতে হলে এক মাত্র যানবাহন নৌকা। কিন্তু রাতবিরেতে কেউ অসুস্থ হলে, সেই নৌকাও আর মেলে না। এদিকে ঠিক মতো রাস্তা না থাকায় ঢুকতে পারে না অ্যাম্বুল্যান্স। সব মিলিয়ে বিধ্বস্ত জনজীবন। যে বিপর্যয় থেকে মুক্তি পেতে নদী পেরিয়ে অনেকেই চলে যাচ্ছেন শহর কাটোয়ায়। সেখানেই মিলছে ‘সুস্থ জীবন’। ভুগছে বেগুনকোলার প্রাথমিক স্কুল।
গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, একটা সেতু তৈরি হলে ও রাস্তাঘাট উন্নত হলেই সব সমস্যা শেষ হয়ে যেত। এই নিয়ে ‘দিদিকে বলো’ ফোন নম্বরেও অভিযোগ জানানো হয়েছিল। অভিযোগ জানানো হয়েছিল স্থানীয় পঞ্চায়েত ও প্রশাসনের কাছেও। কিন্তু তারপরেও কোনও লাভ হয়নি। মেলেনি সুরাহা। গ্রাম থেকেছে গ্রামের জায়গায়। বসতবাড়ি, জমি ফেলে রেখে শহরে পাড়ি দিয়েছে একের পর এক পরিবার।
