পূর্ব বর্ধমান: অবশেষে বর্ধমান আদালতে আত্মসমর্পণ করলেন বড়বাজারের ব্যবসায়ী সব্যসাচী মণ্ডল খুনে অন্যতম মূল অভিযুক্ত তাঁরই খুড়তুতো ভাই সোমনাথ মণ্ডল। ঘটনার পরেই খুন হওয়া ব্যবসায়ীর বাবা দেবকুমার মণ্ডল অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর ভাইপোই সুপারি কিলার লাগিয়ে সব্যসাচীকে খুন করেছেন। খুনের এক মাসের মধ্যেই জাল গোটালেন তদন্তকারীরা।
মঙ্গলবার অভিযুক্ত সোমনাথ মণ্ডল বর্ধমান আদালতের সিজেএমের কাছে আত্মসমর্পণ করে জামিনের জন্য আবেদন করেন। কিন্তু বিচারক জামিন নাকচ করে পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। ৩০ নভেম্বর আদালতে হাজিরার নির্দেশ দেন তিনি।
এর আগে ‘ সুপারি কিলার রিকিকে গ্রেফতার করেছিল রায়না থানার পুলিশ। তাঁকে ধরতে সাহায্য করে কালাড়াঘাট সেতুর ঘটনার দিনের সিসিটিভি ফুটেজ। রিকিকে দেরিয়াপুর গ্রামে নিয়ে এসে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করায় পুলিশ। কান্নায় ভেঙে পড়ে রিকি গোটা হত্যাকাণ্ডের বিবরণ দেন।
তিনি জানান, ড্রাইভারকে ভয় দেখিয়ে সব্যসাচীকে ডেকে পাঠানো হয়। তার অনেক আগেই বাড়ি দেখিয়ে চলে যান সোমনাথ। সব্যসাচী দোতলা থেকে নেমে এলেই পরপর দু বার গুলি চালান রিকি। এরপর তাঁরা মৃত্যু নিশ্চিত করতে বার বার কোপান সব্যসাচীকে।
গতকালই কলকাতার বড়বাজারের ব্যবসায়ী সব্যসাচী মণ্ডল খুনে গ্রেফতার হয়েছে আরও এক দুষ্কৃতী। ধৃতের নাম মহম্মদ জাভেদ আকতার। রবিবার রাতে কলকাতার ময়দান থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিসের একটি দল।
জেলা পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন জানিয়েছিলেন, ধৃত মহম্মদ জাভেদ আকতার সুপারি কিলার টিমের সদস্য ছিল। সোমবারই অভিযুক্ত জাভেদেকেও বর্ধমান আদালতে তোলা হয়। পূর্ব বর্ধমানের রায়নার দেরিয়াপুর গ্রামে পৈতৃক ভিটেতে গত ২২ অক্টোম্বর খুন হন ব্যবসায়ী সব্যসাচী মণ্ডল।
সব্যসাচী মণ্ডল এক বন্ধুকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যান। রাতে বাড়ির ছাদে রান্না হচ্ছিল। সেই সময় সব্যসাচী মণ্ডলের গাড়ির চালক আনন্দ সাউ তাঁকে ছাদ থেকে নীচে নিয়ে যায় কেউ ডাকছেন বলে ডেকে নিয়ে যান। তারপরেই তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেন সব্যসাচীর বন্ধু ও রাঁধুনি। তাঁরাই সব্যসাচীকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। সব্যসাচীর বাবা দেবকুমার মণ্ডল জানান; সম্পত্তি নিয়ে তাদের ভাইপোদের সঙ্গে চরম বিবাদ চলছে। বড় ক্লু পায় পুলিশ। সোমনাথই সুপারি কিলার লাগিয়ে নৃশংসভাবে খুন করেছেন সব্যসাচীকে। ঘটনার তদন্তে সে কথারই সারবত্তা উঠে আসছ। এবারে বিচারের গতিপ্রকৃতি কোন দিকে এগোয় তাই দেখার।