কেতুগ্রাম : বউ সরকারি চাকরি পেয়েছে। বউকে চাকরি করতে না দেওয়ার জন্য ডান হাতের কবজি কেটে দিয়েছিল স্বামী। তারপর সেই কাটা হাত নিয়েই চম্পট দিয়েছিল। পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের রেণু খাতুনের এই মর্মান্তিক পরিণতিতে শিউরে উঠেছিল সবাই। ঘটনায় মঙ্গলবার ভোরেই রেণুর শ্বশুর সিরাজ শেখ এবং শাশুড়ি মেহেরনিকা বিবিকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। কিন্তু তখনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না পলাতক স্বামী শের মহম্মদের। অবশেষে মঙ্গলবার সন্ধেয় শের মহম্মদকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পূর্ব বর্ধমান জেলারই এক প্রান্তে ঘাপটি মেরে ছিল সে। সেখান থেকেই শের মহম্মদকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
স্বামীর এই নৃশংসতার শিকার হওয়া রেণু খাতুন বর্তমানে দুর্গাপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। মঙ্গলবার বিকেলে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে দুর্গাপুরের বেসরকারি হাসপাতালে যান রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায় সহ চারজনের প্রতিনিধিদল। স্বামীর হাতে আক্রান্ত রেণুর যাতে নার্সিংয়ের সরকারি চাকরি পায়, তার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করা হবে বলে জানান মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যাতে কড়া আইনি ব্যবস্থা নেয় প্রশাসন, সেই কথাও বলেন তিনি। লীনা গঙ্গোপাধ্যায় জানান, এই ধরণের ঘটনা খুবই নৃশংস। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও রেণুর নিরাপত্তার বিষয়টিও দেখা হবে বলে জানালেন তিনি।
দুর্গাপুরের ওই বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেও তিনি অনুরোধ করেছেন, যাতে যতটা সম্ভব কম বিল করা হয়। রাজ্য সরকারকেও চিকিৎসার খরচে সহযোগিতার আবেদন জানানো হবে বলে জানান তিনি। মঙ্গলবার রেণুর সঙ্গে দেখা করার পর রাজ্য সমাজ কল্যাণ দফতরের কাছে এই রিপোর্ট জমা দেবে রাজ্য মহিলা কমিশন। উল্লেখ্য, রেণু খাতুনের সঙ্গে যে ঘটনা ঘটে গিয়েছে, তাতে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছে বিভিন্ন মহল। নার্সেস ইউনিটির সম্পাদিকা ভাস্বতী মুখোপাধ্যায় আশ্বাস দিয়েছেন, রেণু খাতুন কাজে যোগ দিলে নার্সেস ইউনিটি সর্বতোভাবে তাঁর পাশে থাকবে। রেণু যাতে চাকরি পায়, সেই দাবি জানাচ্ছে নার্সেস ইউনিটি।