বর্ধমান : কাঁচ পরিষ্কার করতে গিয়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। নার্সিংহোমের চতুর্থ তলা থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হল এক শ্রমিকের। একটা ভুলের জন্যই এই ঘটনা বলে জানা গিয়েছে। বর্ধমানের গোদার স্বাস্থ্যনগরীতে অবস্থিত একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে এই দুর্ঘটনা ঘটে। তাঁকে উদ্ধার করে বর্ধমান হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃতের নাম সেখ সিরাজউদ্দিন (৩৫)। বাড়ি কলকাতায়। নিরাপত্তার ব্যবস্থা কেমন ছিল, তা খতিয়ে দেখছে বর্ধমান থানার পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শী তপন দাস জানিয়েছেন, বুধবার সকালে কাঁচ পরিষ্কারের কাজ করছিলেন ওই ব্যক্তি। আশপাশে অনেকেই ছিলেন সেই সময়। আচমকা তাঁরা দেখেন ওই ব্যক্তি ওপর থেকে চিৎকার করে কিছু বলার চেষ্টা করছে। তাঁরা প্রথমটায় বুঝতে পারেননি বিষয়টা ঠিক কী। পরে বুঝতে পারেন, ওই ব্যক্তি টাল সামলাতে পারছেন না। এরপরই অনেকে ছুটে সিঁড়ি দিয়ে ওপরে যায় তাঁকে বাঁচাতে। কিন্তু কয়েক মুহূর্ত মাত্র সময় পাওয়া গিয়েছিল। সবার চোখের সামনেই ওপর থেকে নীচে পড়ে যান ওই ব্যক্তি। এরপরই তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
মৃত ব্যক্তির ভাগ্নে ইব্রাহিম জানিয়েছেন, তিনিও মামার সঙ্গে ওই নার্সিংহোমেই কাজ করছিলেন। আচমকা শুনতে পান তাঁর মামা বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করছেন। তাঁর মামা ইব্রাহিমের নাম ধরে বলছিলেন, তাঁকে সাহায্য না করলে তিনি মারা যাবেন। পরে ইব্রাহিম বুঝতে পারেন, তাঁর মামা মেশিন লাগাতে ভুলে গিয়েছেন। আসলে বহুতলে কাঁচ পরিষ্কার করার জন্য দড়ির ব্যবস্থা থাকে। সেই দড়ি একটি মেশিনে লাগানো থাকে, যাতে সেটা ধরে আস্তে আস্তে নীচের দিকে নামতে পারেন শ্রমিকেরা। সেই মেশিনটা ঠিক মতো লাগানো ছিল না বলেই দাবি ইব্রাহিমের। সেই কারণেই টাল সামলাতে পারেননি তাঁর মামা। বিপদ বুঝেও তাঁর কিছু করার ছিল না বলেই দাবি করেছেন ইব্রাহিম, কারণ ওই দড়ি ধরে শুধু নীচের দিকে নামা যায়, ওপরে ওঠা যায় না। তাঁর চোখের সামনে মৃত্যু হয় তাঁর মামার।