কেতুগ্রাম: কেতুগ্রাম কাণ্ডে বড় পদক্ষেপ পুলিশের। গ্রেফতার দুই ভাড়াটে খুনি। মুর্শিদাবাদের তালডাঙার বাড়ি থেকে বৃহস্পতিবার তাদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ওই দু’জনের মধ্যে একজনের নাম হাবিব শেখ অপরজন আশরাফ আলি শেখ। দু’জনকে গ্রেফতার করার পর পুলিশ মনে করছে তদন্ত আরও কিছুটা গতি পাবে। এই ঘটনার পিছনে অভিযুক্ত স্বামী শের মহম্মদ, শ্বশুর, শাশুড়ি, ছাড়াও আরও কেউ এই ঘটনায় জড়িত ছিল কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
শনিবার স্ত্রী রেণু খাতুনের ডান হাত কেটে ফেলার ঘটনায় অভিযোগ উঠেছিল স্বামী শের মহম্মদের বিরুদ্ধে। প্রাণে না মেরে স্ত্রীকে ভয়ঙ্কর রকমের ‘শাস্তি’ দিতে চেয়েছিল সে। শুধুমাত্র সেই আশঙ্কায়, যাতে সরকারি চাকরি পাওয়ার পর তাকে ছেড়ে চলে না যান রেণু।আর সেই কসরতে কোনও খামতিও ছিল না। পরিকল্পনা মাফিক নিজের অভিষ্ঠ লক্ষ্যে পৌঁছাতে নিয়ে ভাড়াটে দু’জন খুনিও নিয়ে এসেছিল শের। পুলিশি তদন্ত যত এগোচ্ছে সামনে আসছে এই রকমই সব চাঞ্চল্যকর তথ্য।
এরপর মঙ্গলবার শেরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই উঠে আসে এই দু’জনের নাম। অভিযুক্ত স্বামী শের মহম্মদ পুলিশকে জানায় স্ত্রীর হাত কাটার জন্য শের মুর্শিদাবাদ থেকে দু’জন ভাড়াটে খুনিকে নিয়ে এসেছিল আত্মীয়র মারফত। যেহেতু রেণুকে প্রাণে মেরে ফেলা হবে না সেই কারণে খুব কম টাকার বিনিময়ে তাদের ভাড়া করে নিয়ে এসেছিল অভিযুক্ত।
তখন থেকে পুলিশ তন্ন-তন্ন করে খুঁজতে শুরু করে তাদের। এরপর আজ মুর্শিদাবাদ থেকে অভিযুক্ত দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়।এ দিকে, রেণু খাতুন পুলিশকে জানিয়েছেন, ঘটনার দিন বাপের বাড়িতে ছিলেন তিনি। রাত্রি ন’টা নাগাদ স্বামী শের মহম্মদ তাঁকে বাপের বাড়ি থেকে নিয়ে আসেন। এরপর যখন তিনি ঘুমিয়ে পড়েন তখনই হামলা চালান হয় তাঁর উপর। রেণুর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ঘুমের মধ্যে তাঁর মুখে বালিশ চাপা দেয় স্বামী শের। চোখ খুলতে তিনি দেখতে পান তাঁর মুখে বালিশ চাপা দিয়ে রেখেছে শের মহম্মদ। পাশে দাঁড়িয়ে আরও দু’জন। পুলিশ মনে করছে, ওই দু’জনই ভাড়াটে খুনি। যদি, শের স্ত্রীর মুখে বালিশ চাপা দেয় তাহলে ভাড়াতে ওই খুনিরাই রেণুর হাত ধারাল অস্ত্র দিয়ে কেটে ফেলতে পারে বলে প্রাথমিক অনুমান।
বুধবার রেণু খাতুনের স্বামী শের মহম্মদকে কাটোয়া আদালতে তোলার পর রিমান্ডে নেওয়া হয়। বস্তুত, ২০১৭ সালে শের মহম্মদের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল রেণুর। বিয়ের পর আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে নার্সিং কোর্স করেন তিনি। এরপর সরকারি চাকরির প্যানেলে নামও আসে তাঁর। কিন্তু বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি তাঁর স্বামী। স্ত্রীর হাতের কবজি কেটে নিয়ে চম্পট দেয় সে।