কাটোয়া: বেসরকারি সংস্থার দাপটে ভাঁটা কাটোয়ার প্রাণি সম্পদ দফতর অনুমোদিত দুধ সংরক্ষণ ও শীতলীকরণ কেন্দ্রে। বেসরকারি সংস্থা বেশী দাম দেওয়ায় কাটোয়ার দুধ সংরক্ষণ ও শীতলীকরণ কেন্দ্রে দুধ বিক্রি করতে নারাজ বহু দুধ চাষি (Milk farmer)। কম পরিমাণে মজুত হওয়া দুধ কলকাতায় বাংলার ডেয়ারীতে পাঠাতে কুলোচ্ছেনা পরিবহন খরচে। পাশাপাশি অধিক পরিমাণে দুধ বেসরকারি সংস্থা কিনে নেওয়ায় আর্থিক লোকসানে সরকার অনুমোদিত কাটোয়ার বর্ধমান কো-অপারেটিভ মিল্ক প্রোডিউসার ইউনিয়ন লিমিটেড। বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সরকারকে বাড়াতে হবে দুধের দাম, তা না হলে আগামীতে ধুকবে কাটোয়ার দুধ সংরক্ষণ ও শীতলীকরণ কেন্দ্র।
এই বিষয়ে মন্ত্রী স্বপ্নন দেবনাথ মৌখিক জানান, “বাম জমানার থেকে এখন অনেক বেশী দুধ উৎপাদন হয়। চাষিরা উপকৃত। এখানে এখন ৩০০ বেশি দুধ চাষি এই কাজের সঙ্গে যুক্ত। সরকার থেকে তাঁদের ভর্তুকী দিয়ে ৩৬ টাকা ৫০ পয়সা দরে দুধ কেনা হয়। বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা বেশি দুধ কিনছে ঠিকই আমাদের তরফ থেকেও দুধ চাষীদের এখানে দুধ বিক্রিতে উৎসাহ বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।”
প্রসঙ্গত, ১৯৯০ সালে কাটোয়ার বাসস্ট্যান্ডে গড়ে ওঠে কাটোয়ার দুধ সংরক্ষণ ও শীতলীকরণ কেন্দ্র। উদেশ্য এলাকার প্রত্যন্ত গ্রামে সমিতি তৈরি করে সরকার নির্ধারিত মূল্যে দুধ কিনবে এই সংস্থা। তা মজুত করে পাঠানো হবে মাদার ডেয়ারিতে। সেই পরিকল্পনা মাফিক কাটোয়ার কেতুগ্রাম, মঙ্গলকোট ও কাটোয়ার বিভিন্ন গ্রাম থেকে সংস্থা দুধ চাষিদের কাছ থেকে দুধ কেনা শুরু করেন। কয়েক বছর আগে থেকে শুরু হয় ভাটা। অভিযোগ, মঙ্গলকোট ব্লকে সরকার নির্ধারিত মূল্য কম থাকায় দুধ বিক্রি বন্ধ করে দেয় ব্লকের দুধ চাষীরা। কারণ বিভিন্ন গ্রামে বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা বেশী দামে দুধ কেনা শুরু করেন। এখন শুধু মাত্র কেতুগ্রামের দুটি ব্লকের দুধ চাষীরা দুধ বিক্রি করে এই সংস্থাকে।ফলে ক্ষতি ও লোকসানের মুখে পরে কাটোয়ার দুধ সংরক্ষণ ও শিতলীকরণ কেন্দ্র।
সরকার ঘোষিত দাম কম হওয়ায় মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে দুধ চাষিদের বলে স্বীকার করেছে সংস্থা। দুধ চাষিদের উৎসাহ বাড়াতে সরকার থেকে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দেওয়া হলেও দুধ কেনার প্রতিযোগিতায় টেক্কা দিচ্ছে বেসরকারি সংস্থা গুলি। দুধ কিনতে কৃষকদের গ্রাম ঘুরে এই সংস্থাকে দুধ বিক্রিতে উৎসাহ জোগাতে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে কাটোয়ার দুধ সংরক্ষণ ও শিতলীকরণ কেন্দ্রর আধিকারিক থেকে কর্মীরা।