বর্ধমান: সবাইকে চাকরি করতে হবে এর কোন মানে আছে? সবাই চাকরি করলে ক্ষেতমজুরি করবে কে? অন্য কাজ করবে কে? বৃহস্পতিবার পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে জেলা বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গিয়ে বললেন রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্ধিকুল্লাহ চৌধুরী। আর তা নিয়ে শুরু রাজনৈতিক বিতর্ক।
একটি সিনেমা এখন ভীষণভাবে মানুষের মনকে নাড়া দিয়েছে। টুয়েলভ ফেল। তাতে চম্বলের বিধায়ক তাঁর নিজের স্কুলে টুকলিতে প্রশ্রয় দিতেন। কেন? প্রশ্ন করেছিলেন DSP। সিনেমায় দেখানো হয়েছিল, নায়ক বলেছিলেন, আসলে টুকলি করে পাশ করে গেলে তো বেশিরভাগ শ্রেণি কার্যত মুর্খই থেকে যাবেন। তাতে গ্রামে টুকটাক কোনও কাজ কিংবা চাষবাস করেই চলবে। আসলে নায়কের কথায়, মূর্খ মানুষদের যে বোঝানো সম্ভব, ভোটব্যাঙ্ক সুদৃঢ় করা সম্ভব।
বর্তমানে দুর্নীতি ইস্যুতে বিদ্ধ সরকার। এই পরিস্থিতিতে চাকরিপ্রার্থীরা রাজপথে বসে। সেখানে বইমেলার উদ্বোধন করতে গিয়েই রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী বলেন, ” সবাইকে চাকরি করতে হবে এর কোন মানে আছে? সবাই চাকরি করলে ক্ষেতমজুরি করবে কে?”
বেনিয়মে চাকরি পাওয়ার ভূরি ভূরি অভিযোগ সামনে এসেছে। এমনও হয়েছে, সাদা খাতা জমা দিয়েও চাকরি পেয়েছেন অনেকে, কেউ বা ২-৩ নম্বর পেয়ে। এই পরিস্থিতিতে বাদ পড়েছেন যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা। রাজপথে যে সব চাকরিপ্রার্থী এখনও আন্দোলনরত, তাঁদের উদ্দেশে মন্ত্রীর বক্তব্য, “বাম জমানায় প্রতারিত করা হয়েছে, আমাদের সরকার চাকরি দিয়েছে, প্রতারণা করেনি। রাজ্য সরকার প্রকৃত পক্ষে চাকরি দিচ্ছে। তাই সকলের লোভ হচ্ছে, সবাই চাকরি পাচ্ছে আমরাও চাকরি পাব। তার আগে লাইনে দাঁড়ান তবেই তো চাকরির টিকিট মিলবে।”
মন্ত্রীর এই বক্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে বিজেপি। বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, “এ রাজ্যে যারা প্রকৃত চাকরির দাবিদার, তাঁদের চাকরি তৃণমূল কংগ্রেস চুরি করেছে। যোগ্য ব্যক্তিদের চাকরি দেয়নি। তারপরও বড় বড় কথা।” তিনি আরও বলেন, “একদিকে তৃণমূল কংগ্রেস কেন্দ্রকে আক্রমণ করছে, কেন্দ্র নাকি চাকরি দিচ্ছেনা। অথচ তৃণমূলের মন্ত্রী বলছেন সবার চাকরির দরকার নেই। ওনারা আগে নিজেদের স্ট্যান্ড ঠিক করুন যে পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়ন কীভাবে হবে?”
যদিও এ বিষয়ে তৃণমূলের পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সিদ্দিকুল্লা যা বলেছেন, তা ব্যক্তিগতভাবে বলেছেন। এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই।”