বর্ধমান: গ্রামে-গ্রামে ঘুরছেন শিক্ষকরা। মাইক নিয়ে টোটোয় করে চলছে প্রচার। ব্যানারও টাঙানো রয়েছে। সেখানে লেখা আপনার সন্তানকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কেন ভর্তি করাবেন? এই বিদ্যালয়ে ভর্তি করালে কী লাভ মিলবে? কিন্তু কেন? শিক্ষকদের ঘুরে বেরিয়ে কেন প্রচার করতে হচ্ছে? তবে কি সরকারি স্কুলগুলিতে পড়ার অনিহা কি ক্রমেই বাড়ছে? রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় দেখা যায় কোথাও স্কুল আছে। কিন্তু পড়ুয়া সংখ্যা এক বা দুই। কোথাও আবার উল্টো চিত্র। পড়ুয়া থাকলেও শিক্ষক নেই। এর মধ্যে পূর্ব বর্ধমানের এই চিত্র স্বাভাবিকভাবেই চর্চায়।
পূর্ব বর্ধমানের মেমারি ২ ব্লকের বোহার পঞ্চায়েত এলাকার ১৪ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। সেখানে আর পড়ুয়ার ঘাটতি মেটাতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা গ্রামে গ্রামে ঘুরে প্রচারে চালালেন। ভাড়া করা টোটোর মাথায় লাগানো হয় মাইক। সেই টোটোর পিছনে ঝোলানো ব্যানার। সেখানে লেখা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হলে পড়ুয়াদের কী কী প্রাপ্তি লাভ হবে। সেইসব টোটোয় চড়ে শিক্ষকরা বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে ঘুরলেন। অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে আবেদন রাখলেন যাতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠান সন্তানদের।
সিতাই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক রাজকুমার চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানান, “আমরা লক্ষ্য করছি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়ার সংখ্যা ক্রমশ কমছে। প্রাথমিক বিদ্যালয় সম্পর্কে সঠিক বার্তা অভিভাবকদের কাছে না পৌঁছানোয় তারা তাদের ছেলে মেয়েদের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির বিষয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। অথচ বেশির ভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত শিক্ষক রয়েছেন। শিশুবান্ধব পরিবেশে ছেলে-মেয়েদের পড়ানো হয়। তার সঙ্গে বিনামূল্যে বই, স্কুলের পোষাক ও জুতো পড়ুয়াদের দেওয়া হয়। রয়েছে মিড-ডে মিলের ব্যবস্থা এবং বৃত্তিসহ নানা সুবিধা।”
শিক্ষকদের পাশে দাঁড়িয়ে বোহার ২ নম্বর পঞ্চায়েতের প্রধান মৌসুমী মাঝিও এলাকার অভিভাবকদের কাছে একই আবেদন রাখেন। তার সঙ্গে তিনিও তুলে ধরেন,সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হলে পড়ুয়াদের কি কি প্রাপ্তি লাভ হবে তার ফিরিস্তি। জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শান্তনু কোনার বলেন, “শিক্ষকদের এই উদ্যোগ খুবই ভাল।”