দুর্গাপুর: তৃণমূল নেতার নামে সরকারি জমি রেকর্ড হওয়ার অভিযোগ উঠল কাঁকসার বনকাটিতে। কৃষি জমি মালিকানা বদল নিয়ে উঠেছে হাজার অভিযোগ। নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে কৃষি দফতরের সরাসরি জমি নিজের নামে রেকর্ড করে নেন বলে বনকাটি পঞ্চায়েত এলাকার এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ। এই ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। যদিও ওই নেতার দাবি, চক্রান্ত করে কেউ করে থাকতে পারে এটা। এ নিয়ে পঞ্চায়েত প্রধান তাবাসুম খাতুন কাঁকসার বিডিও ও বিএলএলআরওর দফতরে অভিযোগ জানান।
বাম আমলে বনকাটির মুখোপাধ্যায় পরিবার কৃষি দফতরকে রেজিস্ট্রেশন করে জমি দান করেছিল। দান করা জমিতে তৈরি হয় কৃষি দফতরের কার্যালয়। কৃষিপ্রধান এলাকায় এমন অফিস হওয়ায় উপকারই হতো এলাকার লোকজনের। তবে অভিযোগ প্রায় ২০ বছর আগে বন্ধ হয়ে যায় কার্যালয়টি। অভিযোগ, এলাকার সরকারি কৃষি দফতরের জমি-সহ একাধিক জমি তৃণমূল নেতা বুদ্ধদেব রায়ের নামে হয়ে গিয়েছে সরকারি রেকর্ডে।
এলাকার বাসিন্দা গৌতম পাত্র জানান, এই কৃষি দফতরের থেকে এলাকার কৃষকরা উপকার পেতেন। কিন্তু সেটা বন্ধ হয়ে গেল। এখন আবার দেখছি সরকারি জমি ব্যক্তি মালিকানা হয়ে গিয়েছে। সরকারি জমি সরকার ফিরে পাক, সেটাই দাবি এলাকাবাসীর।
যে মুখোপাধ্যায় পরিবার এই জমি দিয়েছিল, সেই পরিবারের সদস্য দেবীপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় জানান, বর্ধমানের রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে ভূমি দফতরকে এই জমি দানপত্র করে দিয়েছিলেন তাঁর বাবা। অথচ এখন সেই জমি এক প্রভাবশালী ব্যক্তির নামে হয়ে গিয়েছে।
তবে যাঁর নামে জমির রেকর্ড সেই তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি বুদ্ধদেব রায় ওরফে লালু বলেন, “রেকর্ড তো আর কেউ নিজে নিজে করে ফেলতে পারে না। বিএলআরও দফতর থেকে হয়। ভুলভ্রান্তি হয়ে থাকতে পারে। এর পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতেই পারে। আর এটা সরকারি কি না, কৃষি দফতরের ছিল কি না কোনওটাই আমার জানা নেই। এসব আমাকে কোণঠাসা করতে এসব করছে।”
কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ভবাণীপ্রসাদ ভট্টাচার্য বলেন, “আমাদের দল বেআইনি কিছু কখনও সমর্থন করে না। আমাদের নজরে সবে বিষয়টি এসেছে। এরকম সরকারি জমি কেউ আত্মসাৎ করলে তিনি তো একা করেননি। ভূমি দফতরের লোকেরাও যুক্ত। অপরাধী যেই হোন, আইন অনুযায়ী সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” কাঁকসার বিএলএলআরও রাজীব গোস্বামীও বলেন, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।