কাটোয়া: এবার আস্ত রাস্তা (Road) চুরির অভিযোগ! ফলক বসিয়ে প্রকাশ্যেই রাস্তা ‘চুরি’ হল তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতে। অর্ধেক রাস্তার খোঁজ মিললেও গায়েব আরও অর্ধেক রাস্তা। অবাক লাগলেও এটাই সত্যি! অসমাপ্ত অর্ধেক রাস্তার খোঁজ করতে গিয়ে বেরিয়ে এল ঝুলি থেকে বিড়াল। অভিযোগ, রাস্তা নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে এই ফলক লাগিয়ে অসমাপ্ত রাস্তার টাকা চুরি করেছেন শাসক দলের নেতাকর্মীরা। এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই শুরু রাজনৈতিক তরজা। শাসক দলের উদ্দেশে বিজেপির হুঁশিয়ারি, বাকি রাস্তা সমাপ্ত না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে তারা।
কাটোয়া ১ নম্বর ব্লকের অধীনে থাকা ও মঙ্গলকোট বিধানসভার অন্তর্গত গাফুলিয়া আলমপুর গ্রাম। ২০১৯-২০ আর্থিক বছরে মঙ্গলকোটের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর উন্নয়ন তহবিল থেকে গ্রামের বাসস্ট্যান্ড থেকে আলমপুর উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্ত একটি রাস্তা নির্মাণের বরাদ্দ ধরা হয়। ৭ লক্ষ ১১ হাজার টাকা ব্যয়ে ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে দীর্ঘ ২ কিলোমিটার পিচ রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু হয়। কিন্তু মাত্র ৯ দিনের মধ্যেই রাস্তার কাজ সম্পন্ন করা হয়ে যায়। তবে সম্পূর্ণ হয়নি। কাটোয়া ১ নম্বর ব্লক পঞ্চায়েত সমিতি ও আলমপুর পঞ্চায়েতের উদ্যোগেই এই রাস্তাটি হয়েছে। কাটোয়া ১ নম্বর ব্লক পঞ্চায়েত সমিতির সৌজন্য রাস্তা নির্মাণের একটি ফলক বসানো হয়েছে। কিন্তু বাকি রাস্তা গেল কোথায়?
আদতে প্রাক্তন বিধায়ক ও বর্তমানে রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর আর্থিক উন্নয়ন তহবিল থেকে তৈরি হওয়া এই রাস্তা অর্ধেক নির্মাণ করা হয়েছে। বাকি অসমাপ্ত অর্ধেক রাস্তা তৈরি না করেই সেই টাকা পঞ্চায়েত সমিতি ও পঞ্চায়েতের যোগসাজশেই পকেটে পুরেছে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বলে অভিযোগ। অর্ধেক নির্মাণ রাস্তাকেই সম্পূর্ণ হয়েছে বলে দেখিয়ে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে একটি ফলক। এদিকে বিষয়টি জানাজানি হতেই জোর শোরগোল শুরু হয়েছে গ্রামে।
রাস্তা চুরি করা হয়েছে, এমনই অভিযোগ করে গ্রামবাসীদের সরাসরি আঙুল উঠেছে শাসক দলের দিকে। তাঁদের দাবি, অর্ধেক রাস্তা বানিয়ে বাকি টাকা পকেটে পুরেছেন তৃণমূলের নেতারা। এদিকে আলমপুর পঞ্চায়েত প্রধান বাবলু মিঞার বক্তব্য, বিধায়কের উন্নয়ন তহবিলে পাওয়া টাকায় যেটুকু রাস্তার কাজ হওয়ার, সেটুকুই হয়েেছে। আর টেকনিক্যাল ভুলের জন্যই সম্পূর্ণ রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। তাই এমন ফলক বসানো হয়েছে। এমনই যুক্তি দিলেন তিনি।
বিজেপির পূর্ব বর্ধমান জেলা সহ-সভাপতি অনিল দত্তের কটাক্ষ, তৃণমূল এবার রাস্তা চুরি করেছে। সম্পূর্ণ রাস্তা না বানিয়ে অর্ধেক রাস্তা বানিয়ে ফলক বসিয়ে বাকি টাকা আত্মসাৎ করেছেন তৃণমূলের নেতারা। বাকি অসমাপ্ত রাস্তা শীঘ্রই না হলে বিজেপি বড় আন্দোলনে নামবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
আর কাটোয়া ১ নম্বর সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক আসিফ ইকবাল বলছেন, “রাস্তাটি আমার সময় নির্মাণ করা হয়নি। রাস্তা না বানিয়ে ফলক বসানো যায় না। বিষয়টি খোঁজ নেব।”
আরও পড়ুন: Fake IPS: ‘রাজু বন গয়া আইপিএস!’ ব্যবসায়ীর কাছে তোলা নিতে গিয়ে পুলিশের জালে আরেক ভুয়ো অফিসার