পূর্ব বর্ধমান : এবার খোদ বিধায়কের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media) সরব হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) জেলা পরিষদের সদস্য। অভিযোগ, পূর্ব বর্ধমানের (Purba Bardhaman) হাটগোবিন্দপুরের বাসিন্দা কপিলদেব সেনের কাছ থেকে ২০১৫ সালে বর্ধমান উত্তরের বিধায়ক নিশীথ কুমার মালিক প্রাথমিক স্কুলে (Primary School) চাকরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি গিয়ে আড়াই লক্ষ টাকা নেন। কিন্তু, তারপর বেশ কয়েক বছর কেটে গেলেও চাকরি হয়নি। বৃহস্পতিবার কপিলদপব সেনের অভিযোগ সামনে রেখে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সদস্য নুরুল হাসান। তিনি আবার বিধায়কের বিরুদ্ধ গোষ্ঠী বলে পরিচিত।
বুধবার করা ফেসবুক পোস্টে নুরুল হাসান লেখেন, “মেজ জনপ্রতিনিধির কীর্তির নমুনা।অভিযোগকারী নাম, ঠিকানা এবং কাকে অভিযোগ করেছে এটা মুছে দিলাম সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় প্রকাশ করা হবে।” এর সঙ্গেই জুড়ে দেন একটি অভিযোগপত্র। যদিও অভিযোগকারীর নাম প্রকাশ্যে আনা হয়নি। তবে তিনি যে দলের সক্রিয় কর্মী তা অভিযোগ পত্রের বয়ানেই স্পষ্ট। সূত্রের খবর, পূর্ব বর্ধমানের হাটগোবিন্দপুরের বাসিন্দা কপিলদেব সেন। তাঁর কাকাই করেছেন মূলত এই অভিযোগ। তাঁর ভাইপোকে প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকের চাকরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। ঘটনা প্রসঙ্গে কপিলদেব সেন বলেন, “২০১৫ সালে আমাকে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিধায়ক ফোন করেছিল। জানায় মোট ৬ লক্ষ টাকা লাগবে। এখন আপাতত আড়াই লক্ষ দে। বাবা কষ্ট করে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে আনে। সেই টাকা ওনাকে দিই। পরে একটা জাল ওয়েবসাইটে দেখায় চাকরি হয়েছে। একটা ভুয়ো চিঠিও আসে। কিন্তু আজও চাকরি হয়নি। আমার সব ওরিজিনিলান মার্কশিটও ওর কাছে আছে। আমি আমার টাকা সহ সব নথি ফেরত চাই।”
যদিও এই বিষয়ে বিধায়ক নিশীথ কুমার মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি টেলিফোনে সাফ জানান, সব মিথ্যা অভিযোগ। তিনি নুরুল হাসানের বিরুদ্ধে দলের উচ্চ নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ জানাবেন বলেও জানিয়েছেন। প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও বলেন। এদিকে এ খবর প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল শুরু হয়ে গিয়েছে জেলার রাজনৈতিক মহলে। শাসকদলের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাতে ময়দানে নেমে পড়েছে পদ্ম শিবির। জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, “বিজেপি যে অভিযোগ আগে করেছে। এখন তৃণমূল কংগ্রেসের একটা অংশ সেই অভিযোগই তুলছে। টাকা দিয়ে চাকরি হয়েছে, এটা প্রমাণিত। এর সঙ্গে তৃণমূল বিধায়ক, নেতা সবাই জড়িত।” অন্যদিকে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাসের দাবি, “পঞ্চায়েত ভোটের আগে এসব বিরোধীদের চক্রান্ত। সে কারণেই মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। যদি অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ হয় তাহলে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।” যদিও ফেসবুকে পোস্ট করলেও এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত নুরুল হাসান কিছু বলতে অস্বীকার করেন।