কাটোয়া: একদিন অন্ধকার গরাদের পিছনে বসেই মন দেওয়া-নেওয়া হয়েছিল তাদের। সেই গরাদে বসেই ঠিক করেছিল বিয়ে করবে। দু’জনই খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত। বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারই ওদের ‘বসতঘর’। সে ঘরেই নতুন জীবন শুরু করল আব্দুল হাসিম ও শাহানারা খাতুন। খুব বেশিদিন আর সাজা-জীবন নেই তাদের। এরপর মুক্ত হয়ে মন দিয়ে সংসারটাই করতে চায় নবদম্পতি।
অসমের বাসিন্দা আব্দুল হাসিম কর্মসূত্রে বাংলায় এসেছিলেন। একটি খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হন। সাজাও পান। ৮ বছর ধরে এই বর্ধমান সংশোধনাগারই তার ঠিকানা। অন্যদিকে বীরভূমের নানুরের মেয়ে শাহানারাও খুনের মামলায় ৬ বছর ধরে সাজা খাটছেন। এখানেই তাদের প্রথম দেখা, ভাললাগা, ভালবাসা। এরপর একসঙ্গে থাকারও সিদ্ধান্ত নেয়। তাদের বাড়ির লোকজন দেখা করতে এলে, কেউই কিছু লুকোয়নি। সবটা জানিয়েছিল। এরপর ঠিক করে বিয়ে করবে তারা। আর তা এই সাজাপ্রাপ্ত জীবনেই।
নিয়ম মেনেই সংশোধনাগারের জেলারের কাছে আবেদন জানায় হাসিম ও শাহানারা। প্যারলে মুক্তিরও আবেদন জানিয়েছিল তারা। সেই আবেদন জেল মারফত পৌঁছয় সংশ্লিষ্ট দফতরে। পাঁচদিনের প্যারলও অনুমোদন পায়। বিয়ে করে তারা। মানবাধিকার এক সংগঠন সমস্ত ব্যবস্থা করে। নিয়ম মেনে মন্তেশ্বরের কুসুমগ্রামে এদিন রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করে তারা।
হাতে গোনা কয়েকজন এই অনুষ্ঠানে হাজির ছিল। হাসিমের পরিবারের কেউ এদিন আসতে পারেননি। তবে ফোনে সর্বক্ষণ উপস্থিতি ছিল। বিকেলে বিয়ে সেরে নানুরের পথে রওনা দেয় তারা। সেখানে পরিবার নিয়ে এই বিশেষ মুহূর্তের কিছুটা সময় কাটিয়ে আবার ১৬ তারিখ সংশোধনাগারে ফিরবে স্বামী স্ত্রী। তাদের সাজাপ্রাপ্ত জীবন আর বেশি দিন নেই। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর গুছিয়ে সংসার করতে চায় তারা।