পূর্ব বর্ধমান: মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থলে যাবে বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন যুবক। সভাস্থলের কাছাকাছি পৌঁছেও যান। কিন্তু শেষবেলায় ঘটে গেল দুর্ঘটনা। গাড়ি থেকে নামার সময় পা পিছলে কোনওভাবে পড়ে যান ৩২ বছর বয়সী খণ্ডঘোষের মজিদ লায়েক। প্রশাসনের তৎপরতায় অনাময় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে রাতে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর সতীর্থরা জানান, বুকে লেগে গিয়েছিল। শেষ রক্ষা আর করা গেল না। সোমবার ঘটনাটি ঘটে পূর্ব বর্ধমানের কাঞ্চননগর রথতলা এলাকায়। তিনদিনের দুই বর্ধমান সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার ছিল প্রথমদিন। এদিন পূর্ব বর্ধমানে গোদার মাঠে সভা ছিল তাঁর। কৃষি উৎসবের উদ্বোধনও করেন এদিন। মুখ্যমন্ত্রীর সভায় উপচে পড়া ভিড় ছিল তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দলীয় কর্মীরা যান। সেই তালিকায় ছিলেন খণ্ডঘোষের ওজলপুকুর গ্রামের মজিদও। এলাকার অন্যান্যদের সঙ্গে তিনি যান সভাস্থলে।
একটি ট্রাক্টর ভাড়া করে রওনা দেন তাঁরা। সভাস্থলের কাছে পৌঁছে সেই ট্রাক্টর থেকে নামতে যাওয়ার সময় কোনওভাবে পা পিছলে পড়ে যান। গুরুতর আহত অবস্থায় অনাময় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করে প্রশাসন। রাতে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর সঙ্গেই দল করেন সামসের মল্লিক। এদিন সামসের বলেন, “বহু দিন ধরে ও দল করে। এদিন দিদির সভায় যাবে বলে খুব হইহই করছিল। রাস্তায় স্লোগান দিতে দিতে গিয়েছে সকলের সঙ্গে। কাঞ্চননগর রথতলায় নেমে হেঁটে সভাস্থল অবধি যাওয়ার কথা ছিল। গাড়ি থেকে নামতে গিয়ে পিছলে যায়। একেবারে হুমড়ি খেয়ে পড়েছিল। বুকে আঘাত লাগে। এরপরই সব শেষ।”
অন্যদিকে মজিদের সঙ্গে ট্রাক্টরে ছিলেন খণ্ডঘোষের ১৬৭ নম্বর বুথের সভাপতি তৃণমূল নেতা মোল্লা ইমরান হোসেন। ইমরান বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর সভা ছিল। সেখানে যাবে বলে আমাদের খণ্ডঘোষ থেকে অনেকগুলি গাড়ি বের হয়। মজিদ একটায় ছিল। যখন আমরা সভাস্থলে পৌঁছে গাড়ি থেকে নামছিলাম, তখনই পা পিছলে পড়ে যায় ছেলেটা। মাথায়, বুকে আঘাত লাগে। ওখানে প্রশাসনের যে লোকজন ছিল, তারাই এগিয়ে আসে। হাসপাতাল পাঠানোর ব্যবস্থা করে দেয়। অনাময়ে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে চিকিৎসাও চলছিল। পরে রাতে মারা যায়।” জানা গিয়েছে, মজিদ লায়েক তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী। এমনিতে পেশায় জনমজুর। সঙ্গে তৃণমূল করেন। বাড়িতে স্ত্রী, তিন সন্তান রয়েছে। সকলেই ছোট ছোট। একইসঙ্গে তাঁর কাছেই থাকেন বিধবা শ্যালিকা ও শ্যালিকার মেয়ে। মজিদের রোজগারেই সংসার চলত। এই ঘটনায় কপালে বাজ পড়েছে পরিবারের।