কেতুগ্রাম: পঞ্চায়েতের (Panchayat Election) বলি আরও সাধারণ ভোটার। নদিয়ার চাপড়ায় ভোট দিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন এক ভোটার। আর এবার পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামে (Ketugram)। মৃত ব্যক্তির নাম পুলক সরকার (৫৪)। শনিবার ভোট দিতে যাওয়ার সময় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাঁকে বেধড়ক মারধর করেছিল বলে অভিযোগ। রক্তে মাখামাখি হয়ে গিয়েছিলেন। এমন মারধর করা হয়েছিল, যে রাস্তায় পড়ে জ্ঞান হারিয়েছিলেন তিনি। তারপর থেকেই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। প্রথমে বর্ধমান মেডিক্যালে, তারপর সেখান থেকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়। দু’দিন যমে মানুষে লড়াইয়ের পর আজ বিকেলে এনআরএস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় পুলকবাবুর।
পুলক সরকার কেতুগ্রামের ১৮৫ নম্বর বুথের ভোটার। অভিযোগ, শনিবার যখন তিনি ভোট দিতে যাচ্ছিলেন তখন একদল দুষ্কৃতী তাঁর পথ আগলে দাঁড়ায়। তিনি যাতে তৃণমূলকেই ভোট দেন, সেই জন্য চাপ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। কিন্তু পুলকবাবুর দুষ্কৃতীদের কথায় গুরুত্ব দেন না। আর এরপরই তাঁকে বাঁশ, পাইপ দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ভোট দিতে গিয়ে আর বাড়ি ফিরতে পারেননি তিনি। রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে ছিলেন। বাড়ির লোকজন খবর পেয়ে তাঁকে উদ্ধার করে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। কলকাতায় নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করিয়েও বাড়ি ফেরানো গেল না তাঁকে।
এদিকে পুলক সরকারের মৃত্যুর পর তাঁর রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে টানাটানি। সিপিএমের দাবি, ওই ব্যক্তি তাদের সমর্থক ছিলেন। আবার তৃণমূল বলছে, তাদের সমর্থক। তৃণমূল জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলছেন, তিনি কেতুগ্রামের বিধায়কের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলেছেন। বিধায়ক তাঁকে জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তি তৃণমূলের কর্মী এবং সিপিএমের দুষ্কৃতীরা তাঁকে মারধর করেছে। এদিকে সিপিএম জেলা সম্পাদক অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়ের আবার দাবি, পুলক সরকার সিপিএমের বুথ ক্যাম্পে ছিলেন। সেই সময় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা সেখানে চড়াও হয়।
যদিও পুলক সরকারের পরিবারের দাবি, তিনি কোনও রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই পুলকবাবুকে মারধর করেছে বলে দাবি, তাঁর মেয়ে অনুমিতা সরকারের। এদিকে শনিবারের এই ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ করেছে পুলিশও। ইতিমধ্যেই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে কেতুগ্রাম থানার পুলিশ।