পূর্ব বর্ধমান: বিরল প্রজাতির সজারু উদ্ধার হল এক্সপ্রেস ট্রেনের বাতানুকুল কামরা থেকে। রবিবার সন্ধ্যায় ডাউন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস থেকে উদ্ধার হয় দু’টি বিরল প্রজাতির সজারু। বর্ধমান স্টেশনের রেলপুলিশ সজারু দু’টিকে উদ্ধার করে। একইসঙ্গে তিনজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে ওই সজারু পাচারের অভিযোগ ওঠে। রেলের ক্রাইম ব্রাঞ্চ সিআইবি বা ক্রাইম ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চের (CIB) কাছে তথ্য আসে। তারই ভিত্তিতে এদিন সিআইবি ও বর্ধমান রেল পুলিশ যৌথভাবে অভিযানে নামে। রেল পুলিশ সূত্রে খবর, ত্রিপুরার ধর্মানগর থেকে সজারু দু’টিকে আনা হচ্ছিল। এই ঘটনায় রেলের এক চুক্তিভিত্তিক কর্মীর হাত রয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, তাঁর সহযোগিতায় বাতানুকূল কামরায় সজারু দু’টি তুলে নেন গণেশ সাউ ও পিণ্টু কুমার। রেল পুলিশ জানিয়েছে, গণেশ সাউ ঝাড়খণ্ডের গিরিডির বাসিন্দা। পিন্টু কুমারের বাড়ি দিল্লিতে।
যে অস্থায়ী রেলকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা। প্রাথমিক জেরায় তদন্তকারীরা জানতে পেরেছে, শিয়ালদহ নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল সজারু দু’টি। সেখানেই একজনের কাছে ১ লক্ষ টাকায় এগুলি বিক্রিও করার কথা ছিল বলে জানা গিয়েছে। বন্যপ্রাণ পাচার ও বিক্রি করার অপরাধেই তিনজনকে গ্রেফতার করে রেল পুলিশ। সোমবার ধৃতদের বর্ধমান আদালতে তোলা হবে।
রবিবার সন্ধ্যায় ডাউন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস বর্ধমান স্টেশনে পৌঁছয়। ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ট্রেন পৌঁছতেই নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে একটি কামরায় ওঠে তারা। এসি কামরায় একটি নাইলনের ব্যাগ নজরে আসে তাদের। সেই ব্যাগের চেন খুলতেই হতবাক আশেপাশের লোকজন। বেরিয়ে আসে সাদা ধবধবে সজারু।
জানা গিয়েছে, এই সজারু বিরল প্রজাতির। দু’টি সজারু ছিল ওই নাইলনের ব্যাগে। রেলপুলিশ সেগুলিকে বর্ধমান বন বিভাগের হাতে তুলে দেয়। বন দফতর থেকে রেঞ্জ অফিসারের নেতৃত্বে বনকর্মীরা পৌঁছন আরপিএফ পোস্টে। সেখান থেকে সজারু দু’টি রমনার বাগানে নিয়ে যাওয়া হয়।
বনদফতরের রেঞ্জ অফিসার কাজল বিশ্বাসের কথায়, “দু’টি ধবধবে সাদা রঙের হিমালয়ান সজারু উদ্ধার করেছে রেল পুলিশ। আমাদের হাতে তুলে দিয়েছে সেগুলি। প্রাথমিকভাবে সজারু দু’টি শারীরিকভাবে সুস্থ বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে আমাদের বন দফতরের চিকিৎসক সজারু দু’টির চিকিৎসা করার পরই শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানা যাবে। পরবর্তী সময়ে এই দু’টি বিরল প্রজটির সজারুকে কোথায় রাখা হবে বা ছাড়া হবে সেই বিষয়ে বিভাগীয় বনাধিকারিক সিদ্ধান্ত নেবেন।”