পূর্ব বর্ধমান: দশ বছরের এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে এক ব্যক্তিকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দিল আদালত। মোবাইল বাড়িতে দিয়ে আসার নামে পরিকল্পনা করে ওই নাবালিকাকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর লোকলজ্জার ভয়ে ওইটুকু মেয়ে নিজেকে শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। মর্মন্তুদ সেই ঘটনা গড়ায় থানা পুলিশ অবধি। তারপর মামলা দায়ের হয়। সেই মামলার রায়দান করল কালনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত। আদালত সূত্রে খবর, আদালতে এই মামলা চলাকালীন এক বছরের মধ্যেই আত্মহত্যা করে ওই নাবালিকা। সেই আবহে এদিন রায় দেয় আদালত। যদিও শুক্রবার আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে ওই নাবালিকার পরিবার জানায়, অভিযুক্তর ফাঁসি হলে খুশি হতাম।
কালনা থানা এলাকার এই ঘটনা। ২০২০ সালের ১৪ অক্টোবর সন্ধ্যাবেলায় ওই নাবালিকা এলাকার একটি মুদির দোকানে গিয়েছিল। ফেরার পথে ওই ব্যক্তির সঙ্গে তার দেখা হয়। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, সেদিন একটি মোবাইল দেখিয়ে ওই নাবালিকাকে ওই ব্যক্তি বলে চার্জ ফুরিয়ে গিয়েছে। তার বাড়িতে যেন রেখে আসে। নাবালিকা পরিচিত ওই ব্যক্তির বাড়িতে যেতেই পিছু পিছু সেও গিয়ে হাজির হয়।
অভিযোগ ওঠে, নিজের বাড়ির ভিতরে নাবালিকাকে ধর্ষণ করে লোকটি। সে সময় বাড়িতে কেউ ছিল না। এদিকে এরপরই ওই নাবালিকা বাড়িতে গিয়ে মাকে সবটা বলে। তার ভিত্তিতে কালনা থানায় অভিযোগও দায়ের হয়। কালনা থানার পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে ভারতীয় দণ্ডবিধির পসকো আইন-সহ আরও বেশ কয়েকটি ধারায় মামলা দায়ের করে।
সেই মামলায় তদন্তকারী অফিসার -সহ ১৬ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। এরপরই গত বৃহস্পতিবার অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। শুক্রবার ছিল রায়দান। কালনা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক সুধীর কুমার ওই ব্যক্তিকে ২০ বছরের জেলের সাজা শোনায়। একইসঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানা। অনাদায়ে আরও ছ’মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন। সরকারি আইনজীবী মলয় পাঁজা বলেন, আদালত এদিন যা রায় দিল, তাতে অন্তত সমাজে একটা বার্তা দেওয়া গেল, এভাবে অন্যায় করে পার পাওয়া যাবে না। এদিন রায়দানের পর আদালতচত্বরে কান্নায় ভেঙে পড়ে ওই নাবালিকার পরিবার। বলে, “ফাঁসি হলে আরও খুশি হতাম”।