পূর্ব বর্ধমান: শ্বাসরোধ করে এক তৃণমূল কর্মীকে খুনের অভিযোগ উঠল। বৃহস্পতিবার কালনা-২ ব্লকের বৈদ্যপুরে এই ঘটনা ঘটে। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, বিজেপির এক কর্মী এই খুনের ঘটনায় জড়িত। যদিও বিজেপি এই দাবি উড়িয়ে দিয়ে বলেছে, যে দোষী, আইন মেনে তাঁর শাস্তি হবে। কালনা থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। নিহত ওই ব্যক্তির নাম দয়াল হাজরা। এলাকায় দয়াল সক্রিয় তৃণমূল কর্মী হিসাবেই পরিচিত ছিলেন। অন্যদিকে দয়াল খুনে অভিযুক্ত কৃষ্ণচন্দ্র হাতি বিজেপি করেন বলেই দাবি দয়ালের পরিবার-সহ এলাকার লোকজনের। অভিযুক্তকে আটক করেছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, দয়াল হাজরা কীর্তন দলে ঢোল বাজান। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সেখানেই যাচ্ছিলেন তিনি। এরইমধ্যে বাড়িতে খবর আসে, রাস্তার ধারে পড়ে আছেন। ছুটে যান দয়ালের ছেলে। পরিবারের দাবি, কৃষ্ণচন্দ্র হাতি একটি হরিনামে ঢোল বাজানোর জন্য তাঁকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন। এরপরই এই ঘটনা। দয়াল হাজরার ছেলে আশিস হাজরা বলেন, “কৃষ্ণ হাতি বলে একজন আছেন। উনিই বাবাকে বৃহস্পতিবার সাতটা আটটা নাগাদ ডেকে নিয়ে যান। হরিনাম করার জন্য নিয়ে যান। এই লোক আগে বাবাকে মারার হুমকিও দিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার হঠাৎই আমাকে একজন খবর দেন, বাবা রাস্তায় পড়ে আছেন। গিয়ে দেখি বাবা আর নেই। গলায় একটা দাগ ছিল বাবার। মনে হয় কোনও কাপড় দিয়ে এসব করেছে। আমরা তৃণমূল করি বলেই ওরা হুমকি দিত।” যদিও যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি বা তাঁর পরিবারের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় এক বাসিন্দা সৈকত মজুমদারের কথায়, “যে মানুষটা কারও সঙ্গে কোনওদিন বিবাদে যাননি, তাঁর এমন পরিণতি করল। উনি প্রথম থেকেই তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত। ভোটের আগে নাকি কৃষ্ণচন্দ্র হাতিরা হুমকি দিয়েছিল। ভোট মিটে গেছে, তারপরও কারও সঙ্গে কারও দ্বন্দ্ব তো থাকার কথা নয়। কিন্তু এভাবে কারও মনে যে কিছু থাকবে কে জানত। কৃষ্ণচন্দ্র হাতি আগাগোড়া খারাপ লোক। ওই এসব করেছে।”
যদিও বিজেপির মণ্ডল সভাপতি পার্থপ্রতিম তা বলেন, “খবরটা আমরাও শুনেছি। একজন মারা গিয়েছেন, সত্যি তাঁর জন্য আমরা দুঃখিত। কারণ, ভারতীয় জনতা পার্টি কোনও মৃত্যকেই সমর্থন করে না। যে বা যারা এই মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত, ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষ থেকে মণ্ডল সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব নিয়ে বলছি, আইন ব্যবস্থা নিক। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। এর সঙ্গে বিজেপির কোনও সম্পর্কই নেই। শুনলাম বলা হচ্ছে বিজেপির বুথ কমিটির সদস্য এই ঘটনায় জড়িত। একেবারেই তা নয়। ১৯ নম্বর বুথে বিজেপির কোনও সংগঠনই নেই।” পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করেছে।