পূর্ব বর্ধমান: মাতৃহীন বিড়াল ছানাকে মায়ের আদর দিয়ে বড় করছে এলাকারই এক মা কুকুর। নিজের ছানাপোনা গুলো পর পর মরে গেল। এরপর থেকে মা হারা ওই বিড়াল ছানাকেই বুকে আগলে রাখত সারাদিন। দিনভর চোখে চোখে রাখা এই ‘পালিতা মা’-এর দায়িত্ব। অচেনা কাউকে আশেপাশে দেখলে নিরাপদ দূরত্বে ঠেলে পাঠায় বিড়ালটিকে। পূর্ব বর্ধমানের (Purba Burdwan) ভাতার রেলস্টেশন এলাকার লোকজন তারিয়ে উপভোগ করছে এই অসম বাৎসল্য। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাতার রেলটেশন সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা শেখ আসগরের বাড়িতে একটি বিড়াল চারটি বাচ্চা প্রসব করে। কয়েকদিনের মধ্যেই তিনটি বাচ্চাকে নিয়ে পালিয়ে যায় মা বিড়াল। একটি মা হারা হয়ে এদিক ওদিক ঘুরত। এরপরই আসগরের বাড়িতে থাকা একটি কুকুর নিজে থেকেই এগিয়ে আসে ওর কাছে।
যখন একদম ছোট ছিল বিড়ালটি, তখন আরও বেশি চোখে চোখে রাখত মা কুকুর। স্তন্যদানও করেছে বিড়ালটিকে। এখন ওর তিন চার মাস বয়স। তবে পালিতা মায়ের বড্ড ন্যাওটা। আসগরের বাড়িতেই থাকত কুকুরটি। পাঁচ মাস আগে মা কুকুরটি চারটি বাচ্চার জন্ম দেয়।
তবে একটিকেও বাঁচাতে পারেনি। এদিকে সেই সময় থেকেই বিড়ালটিরও মা নিখোঁজ। মুখ শুকনো করে বসে থাকে এক কোণে। সন্তানহারা মা সে। হলই বা সারমেয়। এরপর নিজেই এগিয়ে গিয়ে ধীরে ধীরে কাছে টেনে নেয় বিড়ালটিকে।
বাড়ির কর্তা শেখ আসগর আলি বলেন, “মা কুকুর খুব নজরে নজরে রাখে ওকে। চোখের সামনে দেখলাম কেমন স্তন্যদান করে বাচ্চাকে একটু একটু করে বড় করছে। এরা একে অপরকে ছাড়া থাকতে পারে না কোনও সময়। বাড়ির মধ্যেই সারাক্ষণ ঘোরাফেরা করে।”
তবে এই ঘটনা ব্যতিক্রমী বলেই মনে করছেন পশু বিশেষজ্ঞরা। প্রাণীসম্পদ বিকাশ বিভাগের ভাতার ব্লক আধিকারিক শঙ্খ ঘোষ বলেন, “এটা ব্যতিক্রমী ঘটনা। দু’টি পৃথক গোত্রের প্রাণীর মধ্যে এই ঘটনা দেখা যায় না।” তবে মাতৃত্বের নতুন নতুন রূপ দেখা যায় এই জগতে। এও তার ব্যতিক্রম নয়।