পূর্ব বর্ধমান: হাসপাতালে শৌচালয়ে ঢুকে আঁতকে উঠলেন অন্যরা। চোখের সামনে ঝুলছেন এক রোগী। কিছু আগেও তাঁকে পুরুষ ওয়ার্ডে দেখা গিয়েছিল। শুক্রবার সন্ধ্যায় কাটোয়া হাসপাতালের এই ঘটনায় হইচই পড়ে যায়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, শনিবারই সঞ্জীব পাল (৪২) নামে ওই যুবককে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়ার কথা ছিল। তার আগের সন্ধ্যায় এমন ঘটনায় কপালে হাত পরিবারের লোকজনের। মঙ্গলকোটের বনকাপাসির বাসিন্দা সঞ্জীব কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন। শুক্রবার রাত আটটা নাগাদ এই ঘটনা ঘটে। তাঁর স্ত্রী তাঁর সঙ্গে ছিলেন। একটি গামছা নিয়ে শৌচাগারের দিকে যান তিনি। কিন্তু দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও স্বামী না আসায় খোঁজ নিতে যান স্ত্রী। এরপরই নজরে আসে ভয়াবহ সেই দৃশ্য।
সঞ্জীব পালের স্ত্রী দেবিকা পাল বলেন, “আমার স্বামী অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। বৃহস্পতিবার দুপুরে কাটোয়া হাসপাতালের ১৩ নম্বর বেডে ভর্তি করা হয় ওকে। শনিবার হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ারও কথা ছিল। এরমধ্যে আজ সন্ধ্যায় বাথরুম যাব বলে আমার কাছ থেকে গামছা নিয়ে গেল। অনেকক্ষণ সময় পার হয়ে গেলেও আসছে না দেখে আমি এগোই। বাথরুমের দরজা ঠেলতেই দেখি গামছার ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছে।”
দেবিকার চিৎকার শুনে বাকিরাও ছুটে আসেন। হাসপাতালের কর্মীদেরও খবর দেওয়া হয়। তাঁরা এসেই দেহ নামিয়ে আনেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সঞ্জীব পালের মানসিক সমস্যার ওষুধ চলছিল। মঙ্গলকোট থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। হাসপাতাল সুপার সৌভিক আলম বলেন, “শুনেছি হাসপাতালে এক চিকিৎসাধীন রোগী হাসপাতালেরই শৌচালয়ে গিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। মানসিক কিছু সমস্যার কারণে তিনি ভর্তি ছিলেন। তবে কেন এই ঘটনা ঘটল তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।” স্বামীর এই পরিণতি দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্ত্রী। এখনও ভাবতেই পারছেন না স্বামী এমন কাণ্ড করতে পারেন। বারবারই বলছেন, “মানুষটা গামছা চেয়ে নিয়ে গেল, এমনটা করবে কখনও যেতে দিতাম না।”