পূর্ব বর্ধমান: দীর্ঘদিনের প্রেম ভেঙে যাওয়ার যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে এক যুবকের আত্মহত্যার অভিযোগ উঠল। বর্ধমানের ভাতারের ঘটনা। অভিযোগ, এক তরুণীর সঙ্গে সাত বছরের প্রেম ছিল ওই যুবকের। সম্প্রতি তা ভেঙে যায়। পরিবারের দাবি, এরপরই নিজেকে শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন শুভজিৎ দাস নামে ২১ বছর বয়সী ওই যুবক। বাড়িতেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। এদিকে এই ঘটনা ঘটানোর আগে হোয়াটসঅ্যাপে স্টেটাস দেন তিনি। তা দেখেই বন্ধুরা ছুটে আসেন শুভজিতের বাড়িতে। ঘরে সে সময় মা একাই ছিলেন। তাঁদের কাছে সব শুনে ছেলের ঘরের দরজা ধাক্কা দিতে থাকেন মা। ততক্ষণে সব শেষ। ভাতারের শুভজিৎ দাস গুসকরা কলেজে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। ১৫ বছর আগে তাঁর বাবা মারা যান। বাড়িতে মা দুই ছেলে মেয়ে নিয়ে থাকেন। শুভজিৎ ছোট, বড় দিদি আছে। স্থানীয় বাজারে একটি ছোট্ট চায়ের দোকান। সেই দোকান থেকে যা টাকা পয়সা আসে তা দিয়েই দু’বেলার অন্নের জোগাড়।
বাড়ির লোকেরা জানান, গত সাত বছর ধরে এলাকারই এক তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয় শুভজিতের। সম্প্রতি সে সম্পর্কেই চিড় ধরে। পরিবারের দাবি, এই যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরেই এই ঘটনা। পরিবারের দাবি, ভাতার থানায় তারা লিখিত অভিযোগ জানাতে চলেছে। বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনা, শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
কী ঘটেছিল বৃহস্পতিবার? পরিবার জানায়, প্রতিদিনের মতো রাতের খাবার খেয়ে ঘরে ঢুকে পড়ে ওই কলেজ পড়ুয়া। রাত তখন প্রায় ১২টা। হঠাৎই শুভজিতের হোয়াটসঅ্যাপ স্টেটাসটা নজরে পড়ে এক বন্ধুর। এরপর সেই স্টেটাসে ভিউ বাড়তে থাকে। শুরু হয় ফোনাফোনি। তাঁরা ফোনে খবর দেওয়ার পাশাপাশি বন্ধুর বাড়িতেও ছুটে আসে। এরপরই বাড়ির লোকজন দরজা ভেঙে দেখেন শুভজিতের দেহ ঝুলছে।
শুভজিতের এক আত্মীয় শুভময় ভট্টাচার্য বলেন, “একটা মেয়েকে সাত বছর ধরে ভালবাসত। সে ছেড়ে দিল। প্রতারণা করেছে ওর সঙ্গে। একটা অসম্ভব অবসাদে তলিয়ে যাচ্ছিল ছেলেটা। গলায় দড়ি দিয়ে নিজেকে শেষ করে দিল। বাড়িতেই এই ঘটনা ঘটায় ও। এটা করার আগে ও হোয়াটসঅ্যাপে স্টেটাস দিয়েছিল। আমরা তো কিছু জানতেই পারিনি। বন্ধুরা দেখে ছুটে আসে বাড়িতে। সে সময় বাড়িতে মা আর ছেলেই ছিল।” ভাতার থানার পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই ময়নাতদন্ত হবে।