পূর্ব বর্ধমান: বাড়ির বউকে ভূতে ধরেছে বলে গ্রামময় রটে গিয়েছে। সারা পাড়া এসে হাজির ওই বাড়ির সামনে। এরপর ঠাকুরের থান থেকে গুরুমার দরজা, ভূত ছাড়াতে চলল নানা রকমের কর্মকাণ্ড! ২০২৩ পার করে ২০২৪-এর দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে সমাজ। অথচ এখনও ভূতে পাওয়া, ডাইন প্রথার মতো কুসংস্কারকে আঁকড়ে সমাজের একটা অংশ। পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের একটি ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
কয়েকদিন ধরে এক গৃহবধূ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। অস্থিরতা কাজ করছিল শরীরে, ঘুমোতে পারছিলেন না। তা দেখে পরিবার ও প্রতিবেশীদের সন্দেহ হয় ভূতে ধরেছে ওই বধূকে। ভূত ছাড়াতে নিয়ে যাওয়া হয় ঠাকুরথানে। এরপরই মন্ত্র পড়ে ভূত ছাড়ানো হয়।
শুধু তাই নয়, এলাকার লোকের বিশ্বাস, চুলে লুকিয়ে থাকে অপশক্তি। অভিযোগ, সে কারণেই পুরোহিতের নিদানে ওই বধূর চুলও কিছুটা কেটে নেওয়া হয়। ভাসানো হয় নদীতে। এদিকে ওই চুল ভাসিয়ে দিয়ে ফিরে না আসার সময় পর্যন্ত বধূকে আটকেও রাখা হয়।
ওই মহিলার ভাসুর বলেন, “ভূতে পেয়েছে বুঝতে পেরেছিলাম। ভয়ঙ্কর সব কথা বলছিল। ঠাকুরতলায় নিয়ে যাই। সব ঠিকও করে দেয়। রাতে বাইরে বেরোয়, ভয় পেয়ে গিয়েছে হতে পারে। ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে কাজ হবে না। এটা তাবিজ কবজেই হবে। মাদুলি বেঁধে দিলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। ভূত ছাড়াতে গেলে বোতল লাগবে, হাঁড়ি লাগবে। চুল কাটলেই ভূত চলে যায়। তাই চুল কেটে দেওয়া হল।”
এই ঘটনার প্রতিবাদে সরব পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের শহর বিজ্ঞান কেন্দ্র। সম্পাদক বিশ্বনাথ চক্রবর্তী বলেন, “ওই ভদ্রমহিলার কোনও মানসিক সমস্যা থাকতে পারে। তাঁকে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যাওয়া দরকার। ভবিষ্যতে প্রয়োজন হলে বিজ্ঞান মঞ্চ এই বিষয়ে পদক্ষেপ করবে ওই গ্রামে গিয়ে।”