ভগবানপুর : টাকা দিয়েও চাকরি পাননি। এই অভিযোগ তুলে তৃণমূল নেতার বাড়িতে চড়াও হয়েছিলেন ‘প্রতারিত’রা। তৃণমূল নেতাকে না পেয়ে তাঁর স্ত্রী ও ছেলের উপর চড়াও হন। ছেলেকে গাছে বেঁধে মারধরও করা হয়। পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরের এই ঘটনায় অভিযোগের ভিত্তিতে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের আজ কাঁথি মহকুমা আদালতে তোলা হয়। ধৃতদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। এদিকে, তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না নিয়ে পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করায় ক্ষোভ উগরে দিলেন প্রতারিতরা। তাঁদের বক্তব্য, টাকা নিয়ে ওই তৃণমূল নেতা ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আর তাঁদের জেলে যেতে হচ্ছে।
ভগবানপুরের তৃণমূল নেতা শিবশঙ্কর নায়েকের বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শিবশঙ্কর নায়েক ভগবানপুরের ১ নম্বর ব্লকের কোটবার গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ। তাঁর স্ত্রী মলিনা নায়েক ভগবানপুর ১ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য। গতকাল শিবশঙ্করের বাড়িতে টাকা ফেরতের দাবি জানাতে আসেন প্রতারিতরা। সেইসময় বাড়িতে ছিলেন না ওই তৃণমূল নেতা। তাঁর স্ত্রী এবং ছেলেমেয়েকে বাড়ির বাইরে টেনে এনে মারধর করা হয়। এমনকী, তৃণমূল ওই নেতার ছেলেকে গাছে বেঁধেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
ঘটনার পর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন মলিনা নায়েক। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের নাম অসীম গোল, দীপক মাইতি, কালোবরণ দাস, সৌমিত্র দাস, মোহিতকুমার বেরা। আজ তাঁদের কাঁথি আদালতে তোলা হয়। আদালতে নিয়ে আসার সময় কালোবরণ দাস বলেন, “যিনি টাকা নিলেন তিনি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আর আমাদের পুলিশ গ্রেফতার করল। আমাদের টাকা উদ্ধার হোক।” আর এক ধৃত দীপক মাইতি বলেন, “গ্রামবাসীদের কাছে উনি স্বীকার করেছেন, টাকা নিয়েছেন। গতকাল আমাদের ডেকে ফাঁসিয়েছেন।”
৫ জনকে গ্রেফতারের নিন্দা করে বিজেপির ভগবানপুর উত্তরের মণ্ডল সভাপতি দেবব্রত কর বলেন, “যাঁরা দুর্নীতি করেছেন, তাঁদের পুলিশ গ্রেফতার করল না। অথচ যাঁরা বিক্ষোভ দেখালেন, তাঁদের গ্রেফতার করল। যাতে আগামিদিনে প্রতিবাদ না করতে পারে, সেজন্য বিক্ষোভকারীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। এর তীব্র নিন্দা করছি।”
তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান অভিজিৎ দাস বলেন, “টাকা নিয়েছিলেন কি না, তা তো জানি না। তবে শুনেছি, গতকাল টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে ডেকেছিলেন। তারপর তাঁকে না পেয়ে বিক্ষোভ দেখায় মানুষ। কিন্তু, আইন হাতে নেওয়া উচিত হয়নি। কাউকে মারধর করা ঠিক হয়নি। যার ফলে পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে।”