কাঁথি: প্রত্যেক সভাতেই ‘তৃণমূল এনামূল’ বলে সুর চড়ান বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর বক্তব্যে জোরাল দাবি থাকে, গরু পাচারকারী এনামূল হকের সঙ্গে তৃণমূলের যোগ গভীর। একইসঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই পাচারকাণ্ডের অংশী বলেই দাবি করেন মেদিনীপুরের এই বিজেপি নেতা। এবার তারই পাল্টা দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কাঁথির সভায় সুদীপ্ত সেনের একটি চিঠি তুলে ধরে অভিষেকের দাবি, তাঁর দলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। বরং তাঁর ইঙ্গিত, এনামূল-যোগ রয়েছে বরং শুভেন্দুরই।
সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন ফেরার হওয়ার আগে একটি চিঠি লিখেছিলেন। সেই চিঠি এদিন কাঁথির দইসাইয়ের সভায় তুলে ধরে অভিষেক বলেন, “সুদীপ্ত সেন আদালতকে চিঠি লিখেছেন, ‘৬ কোটি টাকা নিয়েছে শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দু রাখাল নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় করান’।” এরপরই অভিষেকের সংযোজন, “এই রাখালের সঙ্গে এনামূলের কী সম্পর্ক ছিল? মুর্শিদাবাদে কোথায় গরু চড়াত আর কত টাকা করে মাসে নিত তারও তথ্য আমার কাছে চলে এসেছে। বলে না, তৃণমূল-এনামূল। আচ্ছা, গরু পাচারকারীদের সঙ্গে রাখালের সম্পর্কটা কী? গোয়ালে কি গরু চড়াতে যেত রাখাল? ভাবছ তুমি একাই চালাক। বাকি সবাই বোকা। ঠিক সময়ে সব সামনে নিয়ে আসব।”
আরও পড়ুন: শুভেন্দুর তৃণমূল ছাড়ার আসল কারণ জানালেন অভিষেক
গত কয়েকদিন ধরে গরু পাচার, কয়লা পাচার নিয়ে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলির তদন্তের রথ যেমন ছুটছে, একইভাবে বিজেপির নেতারাও প্রতি মুহূর্তে এ প্রসঙ্গ তুলে তৃণমূলকে বিঁধছে। ‘চাল চোর, ত্রিপল চোর, কয়লা চোর, গরু চোর’ বাদ যাচ্ছে না কোনও আক্রমণই। সম্প্রতি শুভেন্দু দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক সভা থেকে দাবি করেন, “কয়লা পাচারের টাকা থাইল্যান্ডে চলে যায়।” সেদিনের সভায় অভিষেকের পাশাপাশি ‘ম্যাডাম নারুলা’র বিরুদ্ধেও অভিযোগ করেছিলেন তিনি। কে এই ম্য়াডাম নারুলা বলতে গিয়ে শুভেন্দু বলেছিলেন, “গত লোকসভা ভোটে কলকাতা এয়ারপোর্টে সোনা নিয়ে ধরা পড়েছিলেন যিনি, তিনিই ম্যাডাম নারুলা। সমঝদারো কে লিয়ে ইশারা হি কাফি হ্যয়।” এদিন অভিষেকের মুখে তারও জবাব শোনা গেল, “এখন আবার আমার বউকে টার্গেট করেছে। আমার বউ নাকি সোনা নিয়ে এসেছিল। বিমান বন্দরে তো ৫০০টা সিসিক্যামেরা আছে, ফুটেজ দেখাও।”
যাঁরা সারদায় টাকা রেখে প্রতারিত হয়েছেন, তাঁদের প্রতি এদিন অভিষেকের পরামর্শ, “আমি এই জেলার মানুষকে বলব যাঁরা সারদায় টাকা রেখে সর্বস্বান্ত হয়েছেন আগামিদিনে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলুন। কোর্টে অনন্তকাল মামলা চলে। গদ্দারের বাড়ি ঘেরাও করুন।… এখান থেকে আওয়াজ তুলুন এদের মেদিনীপুর থেকে হঠানোর। এমন আওয়াজ তুলুন যে শান্তিকুঞ্জ থরথর করে কাঁপে।” শুভেন্দুর বিরুদ্ধে তোলা অভিষেকের অভিযোগ প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির সহ সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারের বক্তব্য, এতদিন তো শুভেন্দু ওদের দলেই ছিল। তখন কেন মুখ খোলেনি।