হলদিয়া : একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর এই প্রথম শুভেন্দু অধিকারীর ‘খাস তালুকে’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। হলদিয়ায় দলের শ্রমিক সংগঠনের বৈঠক এসে শুরু থেকেই নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীকে একের পর এক আক্রমণ শানিয়ে গেলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। বললেন, “এই জেলার সর্বেসর্বা বলে যিনি নিজেকে দাবি করতেন, তিনি এখন ইডি-সিবিআইয়ের ভয়ে নিজের পিঠ বাঁচাতে দিল্লির তল্পিবাহকতা করছেন। যারা ভাবছেন মানুষের টাকা নিয়ে নয়-ছয় করে, যা ইচ্ছে তাই করবেন… আমার পিছনে তো ইডি-সিবিআই লাগিয়েছে। কী করেছে? কাঁচ কলা।”
অতীতেও শুভেন্দুকে একাধিকবার চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রসঙ্গে বললেন, “আমি মতাদর্শে বিশ্বাস করি। আমার রাজনৈতিক মতাদর্শ আছে। কিন্তু তুমি ভাষায় বুঝতে জানো, সেই ভাষায় জবাব দিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানে। আমি রাজনীতি করতে গিয়ে দয়া-দাক্ষিণ্য দেখাই না।” কলকাতায় বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার ইস্যুতে তুলে ধরেও এক প্রস্থ আক্রমণ শানান শুভেন্দুকে। বললেন, “অবিভক্ত মেদিনীপুর ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জেলা। সেই বিদ্যাসাগরের মূর্তি ২০১৯ সালের ১৪ মে যাঁর নেতৃত্বে গুন্ডামি করে ভাঙা হল, তার পদলেহন করে, নিজেকে ইডি-সিবিআই থেকে বাঁচাতে পূর্ব মেদিনীপুরের আবেগকে দিল্লির বুকে বিক্রি করেছে।”
উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সাম্প্রতিক অতীতে দুই বার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লির অফিসে তলব করেছিল। শনিবার হলদিয়ার সভা থেকে সেই দুই বার তলবের হিসেবে কড়ায় গন্ডায় বুঝিয়ে দিলেন অভিষেক। বললেন, “তোমার সিবিআই-ইডি আমাকে দুই বার দিল্লিতে ডেকেছে। আমার মাথা নত করেছ তুমি দুই বার। তোমারও মাথা নত করেছি আমি দুই বার। দুই জন সাংসদ বিজেপি থেকে ভেঙে বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শকে সামনে রেখে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন।”
শুধু বিজেপিকে আক্রমণ করাই নয়। এর পাশাপাশি, দলের একাংশকেও সতর্ক করে দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। হলদিয়ার সভা থেকে কড়া ভাষায় বুঝিয়ে দিয়েছেন, জেলায় সংগঠনের কোথায় কী হচ্ছে, সব খবর তিনি রাখেন। যাঁরা ঠিকাদারি করেন, তাঁদের বুঝিয়ে দিয়েছেন, ঠিকাদারি আর দল একসঙ্গে করা যাবে না।