কাঁথি: হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন আগেই। এবার তা কাজেও করে দেখালেন রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরির পুত্র তথা কাঁথি পুরসভা উপ পুরপ্রধান সুপ্রকাশ গিরি (Suprakash giri)। তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে গিয়ে কার্যত বিপাকে পড়লেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। তাঁকে আইনি নোটিস পাঠালেন মন্ত্রীপুত্র।
সাম্প্রতিক, রামনগরে একটি সভা করতে যান বিরোধী দলনেতা। সেখানে গিয়ে সুপ্রকাশ গিরির শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কে প্রশ্ন তোলেন। পাশাপাশি অখিল গিরিকে নিয়েও বেফাঁস মন্তব্য করেন। অখিল-মন্তব্যকে ব্যাঙ্গ করে শুভেন্দু বলেন, ‘তোমার মালিক তো নবান্ন থেকে ক্ষমা চায়, আর তুমি পরের দিন ক্ষমা চাও।’ এরপরই অখিলপুত্রর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে গিয়ে ‘ঝাড়ের বাঁশ’ বলে কটাক্ষ করেন শুভেন্দু। তাঁর আরও কটাক্ষ, “সে গ্যাজুয়েটও নয় অথচ কাঁথি কলেজের সভাপতি।” একই সঙ্গে বলেন, ‘সামনে ৪টে পুলিশ, পিছনে ৪টে পুলিশ। পার্টিতে এসে কত বড় বড় কথাবার্তা।
পাল্টা উত্তর দেন সুপ্রকাশ গিরি। তিনি দাবি করে বলেন, “একজন ( শুভেন্দু অধিকারী) ওপেন ইউনিভার্সিটি পাস করা ছেলে, যার কোনও শিক্ষাদীক্ষা নেই, অপরকে দোষারোপ করছেন। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি শুভেন্দু অধিকারী নেতাজি ওপেন ইনভারর্সিটি থেকে পাশ করেছেন। সেই সার্টিফিকেট তৈরি করতে গিয়ে জালিয়াতি করেছেন। কারণ ২০০৭-এর পরীক্ষা দেওয়ার জন্য শুভেন্দু অধিকারীর হয়ে অন্য একজন পশ্চিম মেদিনীপুরে বেলদা পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলেন। আমি যে কলেজে পড়াশোনা করেছি শুভেন্দু অধিকারী সেই কলেজের নাম শুনেছেন নাকি?’
এরপর মন্ত্রীপুত্র দাবি করেন বলেন, ‘কলকাতার আশুতোষ কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর পাশ করেছি। শুধু স্নাতকোত্তর নয়, পোস্ট গ্রাজুয়েটে ম্যানেজমেন্ট করেছি। শুভেন্দুবাবু জানাবেনই বা কী করে? শিক্ষার ক্ষেত্রের জালিয়াতি করেছেন। আমি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে কাজ করতাম। শুভেন্দু অধিকারী একজন ব্র্যান্ডের ডাকাত। শিক্ষাদীক্ষা ওনার মধ্যে আসবে না। ছোটবেলা থেকেই তোলাবাজিতে যুক্ত। শুভেন্দু অধিকারীর বয়স ৫২। আমার ( সুপ্রকাশ গিরি) বয়স ৪০। আমি স্নাতক পাস করেছি ২১ বছর বয়সে। শুভেন্দু অধিকারী গ্রাজুয়েশন পাস করছেন ৩৭ বছর বয়সে। ৩৭ বছর বয়সে কি করে গ্রাজুয়েট হয় উনি? আমি উনাকে ওপেন চ্যালেঞ্জ করছি, যদি সৎ সাহস শুভেন্দু অধিকারীর থাকে সার্টিফিকেট দেখাক? আমি ওনার সামনে সার্টিফিকেট নিয়ে বসতে রাজি আছি।’ একই সঙ্গে বলেছিলেন, ‘আমি শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করব।’
সেই হুঁশিয়ারিকেই সত্যি করে মঙ্গলবার সকালে সুপ্রকাশ গিরির আইনজীবী শুভেন্দু অধিকারীকে নোটিস ধরান। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘দেখতে পাচ্ছেন নাকি অখিলবাবু, আপনার পুত্র তো আপনার ঝাড়ের বাঁস। সে আবার বড় নেতা? সে আবার বড় নেতা? সে গ্যাজুয়েটও নয় অথচ কাঁথি কলেজের সভাপতি।’