হলদিয়া : ১২ জানুয়ারি স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল হলদিয়া ইন্সটিটিউট অফ হেলথ সায়েন্স কলেজ ক্যাম্পাসে। সেই সভায় বক্তব্য রাখেন প্রাক্তন সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠ। এই অনুষ্ঠান শেষে সংবাদিকদের সঙ্গে দুর্বব্যহারের অভিযোগ ওঠে প্রদেশ কংগ্রেসের নব নিযুক্ত সহ-সভাপতি লক্ষ্মণের বিরুদ্ধে। যা নিয়ে চর্চা চলছে রাজনৈতিক মহলে। এই লক্ষ্মণই একদা বাম (Left) ছেড়ে ভিড়েছিলেন বিজেপিতে (BJP)। অবশেষে ২০১৯ সালের গোড়ার দিকে কংগ্রেসে যোগদান করেন লক্ষ্মণ শেঠ। তাঁর হাতে দলীয় পতাকা দিতে দেখা যায় সোমেন মিত্রকে। যদিও তারপরেও যেতে চেয়েছিলেন তৃণমূলে। কিন্তু, এখন কংগ্রেসে গুরু দায়িত্ব পাওয়ার পরেও কেন সাংবাদিকদের সঙ্গে দুর্বব্যহার করছেন এই বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ? প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলেই। অন্যান্য রাজনৈতিক দলের অনেকেই বলছেন রাজনীতির ময়দানে প্রাসঙ্গিকতা হারিয়েছেন লক্ষ্মণ। সে কারণেই নজর কাড়তে এসব করছেন তিনি। আবার অনেকেই বলছেন নতুন দায়িত্ব পেয়ে অংহকারী হয়ে গিয়েছেন তিনি। কেউ কেউ আবার বলছেন তাঁকে নতুন পদে মানতে পারছেন না কংগ্রেসের বহু কর্মীই। দলের মধ্যেও তৈরি হয়েছে অসন্তোষ। আর তাতেই মন ভাল নেই লক্ষ্মণের।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবারের অনুষ্ঠানে শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে চরম দূর্ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে লক্ষ্মণ শেঠের বিরুদ্ধে। কার্যত হাত দিয়ে মিডিয়ার বুম সরিয়ে দিতে দেখা যায় তাঁকে। মুখে শোনা যায় ‘দূর দূর শব্দ’। যা নিয়েই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। এ বিষয়ে ফের লক্ষ্মণকে প্রশ্ন করা হলে ঘটনার কথা অস্বীকার করেন তিনি। বলেন, “কার কী বুম ছিল আমি দেখিনি। আর এমন কোনও ঘটনাই হয়নি। কোনও বুম দেখেনি আমি।” এই বিষয়ে সিপিএমের রাজ্য ও জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য হিমাংশু দাস বলেন, “ওনার বিষয়ে কী আর বলবো! তবে উনি যে দলেরই লোক হন না কেন, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসাবে তার থেকে এমন ব্যবহার কোনওভাবেই মানায় না। তবে কেন করলেন এমন জানি না।”
সমালোচনার সুরে হলদিয়ার বিজেপি বিধায়ক তাপসী মণ্ডল বলেন, লক্ষণবাবু সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কেন করলেন জানি না। প্রশ্ন অপছন্দ হতেই পারে এড়িয়ে যেতে পারেন, কিন্তু সংবাদ মাধ্যমকে অপমান কোনও ভাবেই মানা যায় না।” সমালোচনা করেছেন জেলা আইএনটিটিইউসি সভাপতি শিবনাথ সরকারও। তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে লেখার স্বাধীনতা সংবাদমাধ্যমের রয়েছে। তা বলে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে দুর্ব্যবহার বা খারাপ আচরণ করব এমন নয়। তবে কেন উনি এমন করলেন তা জানি না।” প্রসঙ্গত, এর সাম্প্রতিককালে বহুবার সাংবাদিকদের সঙ্গে দুর্বব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন দলের নেতাদের বিরুদ্ধে। দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে। যা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছিল বাংলার রাজনৈতিক মহলে। এবার নজরে লক্ষণ।