Bengal Migrant Worker in Uttar Pradesh: রওনা দিয়েছিলেন উত্তর প্রদেশে, পথেই এক ভয়ঙ্কর বিভীষিকার সাক্ষী থাকলেন জাহাঙ্গীরা
Purba Medinipur: পূর্ব মেদিনীপুর জেলার উত্তর কাঁথির দেশপ্রাণ ব্লকের চালতি গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর সাহা (৩৬)। রাজমিস্ত্রির কাজে যোগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে গত শুক্রবার ভোর পাঁচটা নাগাদ কাঁথি থেকে পরিবারের পাঁচজন রওনা দেন

পূর্ব মেদিনীপুর: সংসার চলছিল না এখানে থেকে। তাই দু’টো পয়সা রোজগারের জন্য যাচ্ছিলেন উত্তর প্রদেশে। কিন্তু কপালে হয়ত সইল না। নতুন জীবিকার খোঁজে বেরিয়ে গিয়ে ঘটল বড় অঘটন। পরিযায়ী শ্রমিক পরিবারের দু’জনের মৃত্যু। তিনজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন। শোকের ছায়া এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ বলাবলি করছেন, পেট চালানোর জন্য পুরো পরিবারটা বাইরে গিয়েছিল। তবে সংসারের দু’জনই আর থাকল না।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার উত্তর কাঁথির দেশপ্রাণ ব্লকের চালতি গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর সাহা (৩৬)। রাজমিস্ত্রির কাজে যোগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে গত শুক্রবার ভোর পাঁচটা নাগাদ কাঁথি থেকে পরিবারের পাঁচজন রওনা দেন। শনিবার দুপুর প্রায় বারোটার সময় ট্রেন থেকে নামার পর আত্মীয়ের বাড়ির উদ্দেশ্যে অটো করে যাচ্ছিলেন। আর সেই সময়ই ঘটে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান জাহাঙ্গীরের স্ত্রী ফরিদা বিবি (৩০) এবং বড় ছেলে জাহানসিম সাহা (১২)। বাকি তিনজন গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন জাহাঙ্গীর নিজে (৩৬)। ছোট ছেলে ফারজান সাহা (৭) এবং ভাগ্নি সাহারিনা খাতুন (১৫)। হঠাৎ এই মৃত্যুর খবরে কান্নায় ভেঙে পড়েছে গোটা চালতি গ্রাম।
জাহাঙ্গীরের পরিবারে দীর্ঘদিন ধরেই দারিদ্রতার ছাপ। তাঁর মা শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী, আর বাবা মানসিক ভারসাম্যহীন। সংসারের একমাত্র রোজগেরে ছিলেন জাহাঙ্গীর ও তাঁর স্ত্রী ফরিদা। তাঁদের অকাল মৃত্যুতে শোকে স্তব্ধ পরিবার।
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, অভাবের তাড়নায় জাহাঙ্গীর পরিবার নিয়ে উত্তরপ্রদেশে কাজ করতে গিয়েছিলেন। অথচ যাত্রাতেই মৃত্যু কেড়ে নিল স্ত্রীর ও সন্তানের জীবন। কাঁথি থানার পক্ষ থেকে পরিবারের কাছে দুর্ঘটনার খবর পৌঁছতেই চারদিক থেকে গ্রামে ভিড় জমে যায়। আত্মীয়-স্বজন থেকে শুরু করে প্রতিবেশী। সবার চোখে জল।
মৃতদের পরিবারের এক আত্মীয় শেখ হাকিম বলেন, “অভাবের সংসারে ভরসা ছিল জাহাঙ্গীর আর তাঁর স্ত্রী। কাজের খোঁজে ভিনরাজ্যে গিয়েছিল। দুর্ঘটনায় স্ত্রী-সন্তানের মৃত্যুতে পরিবার কার্যত ভেঙে গেল। আমরা সরকারের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছি।”

