কলকাতা: রকেট বাজি টেস্ট করতে গিয়েই বিপর্যয়! হাওয়ার ধাক্কায় বাজির অভিমুখ ঘুরে যাওয়াতেই ভয়াবহ বিস্ফোরণ! প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই অনুমান জেলা পুলিশের একাংশের। যাঁরা আহত বা কারখানায় কাজ করেন এমন কয়েকজনের বয়ান থেকে নাকি এমনটাই জানতে পেরেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে আচমকা বিকট শব্দে কেঁপে উঠেছিল গোটা গ্রাম। এরপর সন্ধ্যার মধ্যেই একে একে নটি দেহ উদ্ধার হয়। দেহাংশের খোঁজে ছেঁচে ফেলা হয় পুকুর। এখনও এসএসকেএম হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন দুজন। তার মধ্যে সামনে আসছে বাজি পরীক্ষার তত্ত্ব। তবে সেই তত্ত্বে এখনই শিলমোহর দিচ্ছে না সিআইডি।
প্রাথমিক তদন্তের পর জেলা পুলিশের একাংশ বলছে, বেআইনি বাজি কারখানার পাশে ফাঁকা মাঠে রকেট বাজি বা হাওয়াই বাজি পরীক্ষা করা হচ্ছিল। এরকমটা প্রায়ই করা হয়ে থাকে বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। হঠাৎ হাওয়ার ধাক্কায় রকেট নাকি অভিমুখ পরিবর্তন করে কারখানার দিকে চলে যায়। তার জেরেই দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশের দাবি, কারখানার ছাউনির পাশে খোলা জায়গায় শুকনো করা হচ্ছিল বাজির মশলা। সেখানেই প্রথমে আগুন ধরে যায়, যা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ছাউনির মধ্যে থাকা বারুদ এবং বাজির মশলায়। তার মধ্যেও আগুন থেকে বাকি বারুদ এবং মশলা বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন কর্মীরা। এরই মধ্যে ফের ঘটে বিস্ফোরণ। এই বয়ান কতটা ঠিক, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। এই প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান রেকর্ড করবে সিআইডি।
রাজ্য এবং জেলা পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকদের একাংশের দাবি, বিস্ফোরণের পর সাদা ধোঁয়া দেখা গিয়েছিল। সাধারণত অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট জাতীয় রাসায়নিক থাকলে ধোঁয়া সাদা হয় না। এছাড়া দেখা গিয়েছে মাশরুম ক্লাউড। বদ্ধ ঘরে বিস্ফোরণ হলে মাশরুম ক্লাউড তৈরি হয় বলে দাবি করছেন শীর্ষ পুলিশ কর্তারা।
আরও জানা যাচ্ছে, বিস্ফোরণে মৃত এবং আহতদের দেহে পোড়া দাগ রয়েছে তবে স্প্লিন্টার বা শার্পনেলের কোনও আঘাত খুঁজে পায়নি পুলিশ।
অন্যদিকে, সিআইডি-র দাবি, এখনই কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছনো সম্ভব নয়। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে নিশ্চিত হবেন কী ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়েছে। বিস্ফোরণের জায়গায় কোনও স্প্লিন্টার আছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা হবে। এই সব বিষয় খতিয়ে দেখার পর স্পষ্ট হবে, কেবল বেআইনি আতসবাজি কারখানা ছিল? না কি আতসবাজির আড়ালে বোমা তৈরি হত?