এগরা: শুধু বেআইনি আতসবাজি নয়, ভানু বাগের নেতৃত্বেই বাঁধা হতো বোমা। কাজে লাগানো হতো এলাকার মহিলাদের। এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি মৃত জয়ন্ত জানার পরিবারের। বেআইনিভাবে বোমা বাধা হতো। জানতেন ভানু বাগের স্ত্রী। এমনটাই দাবি জয়ন্তর স্ত্রীর। প্রসঙ্গত, এগরায় (Egra Blast Case) ভানু বাগের যে বেআইনি বাজি কারাখানায় বিস্ফোরণে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে সেই কারখানাতেই কাজ করতেন জয়ন্ত। ছেলের মৃত্যুতে শোকে পাথর হয়ে গিয়েছেন তাঁর মা। বসে রয়েছেন কারখানার সামনের রাস্তায়। তিনি জানাচ্ছেন প্রায় তিন বছর ধরে এই কারাখানায় কাজ করত তাঁর ছেলে।
এদিন টিভি-৯ বাংলার মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “ছেলে বোমা বাঁধার কাজ করত বলে জানতাম। তবে কী বোমা বাঁধত জানি না। তিনশো, সাড়ে তিনশো টাকা দৈনিক মজুরি পেত। আমি কতবার ওকে এই কাজ করতে নিষেধ করেছিলাম। জানতাম বেআইনি কাজ। কিন্তু, ও কথা শোনেনি। আজ এই পরিণত হল।”
মায়ের পাশাপাশি জয়ন্তর স্ত্রী আবার ভানুর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করছেন। তিনি বলছেন, “বোমা তৈরির খুব কম সামগ্রীই এই কারখানায় থাকত। বাকি সবই আসতো বাইরে থেকে। ওর ছেলের বাড়িও কাছে। ওখানে গেলেও লুকানো বোমা দেখতে পাওয়া যাবে। পুলিশের সঙ্গেও ওর যোগাযোগ ছিল। ঘুষ দিত পুলিশকে। ওর ফাঁসি চাই। ও না মরলে গ্রামের বাকিদের ও শেষ করে দেবে। আমার স্বামী যে এখানে হাত বোমা বাঁধত তা আমি জানতাম। তবে ও স্বীকার করত না। বলতো রান্নার কাজ করে।” এদিকে বারবার বোমা বাঁধার কথা উঠে এলেও সেগুলি কী ধরনের বোমা, সেগুলির আইনি বৈধতা রয়েছে কিনা তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
এদিকে স্থানীয় সূত্রে খবর, বিস্ফোরণের দিন ভানুর শরীরেও আঘাত লাগে। কিন্তু, পরিস্থিতি হাতের বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে দেখে তিনি এবং তাঁর স্ত্রী চম্পট দেন এলাকা থেকে। বাইকে করে তাঁদের ওড়িশার দিকেও যেতে দেখেন এলাকার বাসিন্দারা। সূত্রের খবর, সাহারা গ্রাম লাগোয়া ওড়িশার একটি গ্রামের বাড়িতে লুকিয়ে রয়েছেন ভানু। পুলিশের নজর এড়াতে বাড়িতেই চিকিৎসা করাচ্ছেন। সেই বাড়িটা আদতে কোথায় তা খোঁজার চেষ্টা করছে পুলিশ। খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বালেশ্বর জেলায়। ইতিমধ্যেই ভানু বাগ, তাঁর ছেলে পৃথ্বীজিৎ বাগ এবং ভানুর স্ত্রীর নামে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৮৮, ৩০৪, ২৮৬ ও ফায়ার সার্ভিসেস অ্যাক্টের ২৪ ও ২৬ ধারায় FIR দায়ের হয়েছে বলে খবর।