কলকাতা: নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর ‘অফিস কাম রেসিডেন্স’-এ পুলিশি তল্লাশির মামলায় পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারের কাছে রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি ছিল। বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, ‘পুলিশ কি আইন জানে না? না জেনে একজন বিরোধী দলনেতার বাড়িতে তল্লাশি চালাল কেন? এটা তো দুর্ভাগ্যজনক।’ কোনওরকম সার্চ ওয়ারেন্ট ছাড়া কীভাবে বিরোধী দলনেতার কার্যালয়ে এই তল্লাশি চালানো হয় তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে আদালতকক্ষে। বিচারপতির কড়া নির্দেশ, এর পর থেকে বিরোধী দলনেতার কার্যালয় বা যেকোনও জায়গায় তল্লাশি চালাতে গেলে যেন আদালতের অনুমতি নেওয়া হয়। একইসঙ্গে পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেওয়া হয় আগামী ১৪ জুন এ নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট হলফনামা আকারে যেন আদালতে দাখিল করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার শুভেন্দু অধিকারীর নন্দীগ্রামের কার্যালয়ে তল্লাশি চালায় জেলা পুলিশ। তমলুক মহকুমা পুলিশের আধিকারিকদের সঙ্গে ছিল নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ। এই ঘটনার পরই টুইটারে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী লেখেন, ‘আগাম কোনও খবর না দিয়ে, কোনও তল্লাশির ওয়ারেন্ট ছাড়াই, কোনও ম্যাজিস্ট্রেট ছাড়াই রাজ্য পুলিশ জোর করে আমার নন্দীগ্রামের বিধায়ক অফিসে ঢুকে পড়ে। এটা বিরোধীদের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকারের একটা ঘৃণ্য পরিকল্পনা।’
একইসঙ্গে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধেও বিষোদগার করেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। তিনি বলেন, “ওটা বিধায়ক কার্যালয় নয়, ওখানে আমি থাকি। রেসিডেন্স কাম অফিস। এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ করেছে। তবে কিছুই করতে পারবে না। মানুষ পাশে আছেন। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের নাম আজ থেকে আমি দিয়েছি মমতা পুলিশ।”
এরপরই গত মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন শুভেন্দু অধিকারী। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা মামলা দায়ের করার অনুমতি দেন। ওয়ারেন্ট ছাড়া কীভাবে বিরোধী দলনেতার কার্যালয়ে তল্লাশি হল সে নিয়েই প্রশ্ন তোলেন তিনি। জেলা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে কার্যত প্রশ্ন উঠে এল এদিনের হাইকোর্টের নির্দেশে। সেদিনের ঘটনার কারণ হলফনামা দিয়ে ব্যাখ্যা করতে হবে পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অমরনাথ কে-কে।
গত বিধানসভা নির্বাচনে শুভেন্দু অধিকারীর ভোটের এজেন্ট ছিলেন মেঘনাদ পাল। তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে জাল নথি দিয়ে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ ওঠে। দায়ের হয় মামলাও। এই মামলায় নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের হরিপুরে তল্লাশি চালায় পুলিশ। কিন্তু মেঘনাদ বা তাঁর স্ত্রীকে না পেয়ে নন্দীগ্রামের নন্দনায়ক বাড়ে শুভেন্দুর কার্যালয়ে তল্লাশি চলে অভিযোগ। যা নিয়ে তৈরি হয় বিতর্ক।