কাঁথি : কাঁথি পৌরসভার গ্রিন সিটি মিশনে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তে এবার আরও তৎপর পুলিশ। সাক্ষী হিসেবে নোটিস পাঠানো হল কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারীর বড় ছেলে কৃষ্ণেন্দু অধিকারী এবং তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীর স্ত্রী সুতপা অধিকারীকে। আগামিকাল (মঙ্গলবার) তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে বলে কাঁথি থানার সূত্র মারফত জানা গিয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৯ সাল পরবর্তী সময় থেকেই কালীঘাট এবং অধিকারী পরিবারের মধ্যে দূরত্ব বাড়ছিল। এরপর ২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর মেদিনীপুর কলেজ মাঠে ঘাসফুল শিবির ছেড়ে পদ্ম শিবিরে যোগ দেন মমতার প্রাক্তন সেনাপতি তথা রাজ্যের বর্তমান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এরপর একুশের বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রামে হাইভোল্টেজ লড়াই। বিভিন্ন রাজনৈতিক টানাপোড়েনের সাক্ষী নন্দীগ্রাম থেকে শেষ হাসি হেসেছিলেন অধিকারী বাড়ির মেজ ছেলেই।
এদিকে শান্তিকুঞ্জের সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব বাড়তেই অধিকারীদের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির মামলা করা হচ্ছে বলে গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ। তেমনই একটি অভিযোগ হল ‘গ্রিন সিটি মিশন’ প্রকল্পের দুর্নীতি সংক্রান্ত তদন্ত। অভিযোগ উঠেছিল গ্রিন সিটি প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন হাই মাস্ট বাতিস্তম্ভ, বাতিস্তম্ভের সৌন্দর্যায়ন এবং প্রকল্পের আওতায় অন্যান্য সৌন্দর্যায়নের কাজে আর্থিক দুর্নীতি হয়েছিল। ওই ঘটনায় সরাসরি নবান্নের নির্দেশে জেলা প্রশাসনের তদারকিতে গতবছরের ২৯ ডিসেম্বর জেলাশাসকের নির্দেশ কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটিতে আছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক শ্বেতা আগরওয়াল, জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ)মানব সিংলা, কাঁথির মহকুমাশাসক, মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সোমনাথ সাহা, কাঁথি থানার আইসি অমলেন্দু বিশ্বাস সহ প্রশাসনিক কর্তা এবং কাঁথি পৌরসভার চেয়ারম্যান।
ইতিমধ্যে এই তদন্তের বেশির ভাগ নথি সংরক্ষণ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কাঁথি পৌরসভার তৎকালীন নির্বাহী কর্মকর্তা সমীর দে’কে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে। পাশাপাশি ইঞ্জিনিয়ার দিলীপ চুয়ানকে তদন্তের জন্য হেফাজতে নেওয়া হয় কাঁথি থানার তরফে। যদিও দিলীপ বাবু বর্তমান এই মামলায় জামিনে রয়েছেন এবং বর্তমানে কর্মরত কলকাতার ‘সুডা’ দফতরে। এবার সেই তদন্তের জন্য কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারীর বড় ছেলে কৃষ্ণেন্দু অধিকারী ও তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীর স্ত্রী সুতপা অধিকারীকে ১৬০-র নোটিস পাঠালেন কাঁথি থানার তদন্তকারী অফিসাররা।
সোমবার বিকেলে বাড়ি করকুলির শান্তি কুঞ্জে কাঁথি থানার পুলিশ নোটিস দিয়ে আসে বলে জানা গিয়েছে। মূলত আর্থিক যোগাযোগ রয়েছে কি না, সেই বিষয়ে খোঁজ খবর সংক্রান্ত তথ্য নেওয়া হবে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। পাশাপাশি এই দুই জনকে আগামিকাল (মঙ্গলবার) কাঁথি থানায় আসতে বলা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। যদিও সুতপা অধিকারী যদি চান তাহলে মহিলা পুলিশকর্মী নিয়ে শান্তি কুঞ্জে গিয়েই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন তদন্তকারীরা। এ ক্ষেত্রে সুতপা দেবীর কোনটিতে সম্মতি রয়েছে, তা জানাতে বলা হয়েছে। যদিও তদন্তকারী আধিকারিকরা এই বিষয়ে বিশেষ কিছু জানাতে চাননি।