পূর্ব মেদিনীপুর: গান গেয়ে দেশের মাহাত্ম প্রচার করতেন। এর জেরে কারাদণ্ডও হয়েছে দু’বার। কিন্তু আন্দোলন থেকে পিছিয়ে আসেননি তিনি। কথা হচ্ছে চারণ কবি নলিনীরঞ্জন হোতার। প্রচারের অন্তরালেই থেকে গিয়েছেন।
স্কুলজীবন শেষ হওয়ার আগেই ছেড়েছিলেন পড়াশোনা। স্কুল ছেড়ে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। সময়ই তাঁকে বাধ্য করেছিল দেশব্রতি হতে। তিনিই নলিনীরঞ্জন হোতা। এই উপকূলের জেলা মেদিনীপুরের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে নলিনীকে সকলে চেনেন চেনে চারণ কবি হিসাবে।অসহযোগ আন্দোলন ও লবণ সত্যাগ্রহ আন্দোলনে জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করতে তিনি গানকেই হাতিয়ার করেছিলেন।
অবিভক্ত মেদিনীপুরের তমলুক অধুনা নন্দকুমার থানার কল্যানচক গ্রামে জন্ম নলিনীর ১৯০১ সালের ৯ ডিসেম্বরে। নলিনী রঞ্জনের গ্রাম কল্যাণচকের জমিদার ভবতারণ পাহাড়ি স্বদেশী মন্ত্রে দীক্ষিত ছিলেন। এদের আদর্শেই দীক্ষিত হয়েছিলেন নলিনী রঞ্জন। ছেড়ে দিয়েছিলেন স্কুলের পড়াশোনা। ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন স্বদেশী আন্দোলনে।
১৯২১ সালে ২০ বছর বয়সে তৈরি করেছিলেন হিতসাধন কমিটি। এরপর এই সংগঠন বিভিন্ন গ্রামে দরিদ্রদের সেবা করত। ১৯২৫ সালে পূর্ব বঙ্গের বরিশাল থেকে মহিষদল এসেছিলেন চারণ কবি মুকুন্দ দাস।তাঁর থেকেই প্রভাবিত হয়েছিলেন নলিনী রঞ্জন হোতা। প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ হরিপদ মাইতি বলেন, ‘মুকুন্দ দাসের থেকে প্রভাবিত হয়ে নলিনী রঞ্জন চারণ দল খোলেন, চারণ গান, নাটক ইত্যাদির মাধ্যমে জনগণকে দেশাত্মবোধে উদ্বুদ্ধ করতেন। জেলে গিয়েছিলেন দু’বার। তবুও তিনি তার কাজ ভোলেননি। কিন্তু রয়ে গিয়েছেন প্রচারের অন্তরালে।’
আজ ও তিনি অন্তরালেই রইলেন ৭৫ রে বছরের ভারত কি মনে রাখবে তার এই তাঁর অন্তর ভুক্তি? প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যায়।