কনিষ্ক মাইতি: জেলাজুড়ে ফার্স্ট ডোজ করোনা ভ্যাকসিনের (Corona Vaccine) আকাল ছিলই। তার মধ্যে সোমবার থেকে করোনা ভ্যাকসিন নিতে গিয়ে সমস্যার মুখে পড়তে চলেছেন কাঁথি (Contai) এলাকার বাসিন্দারা। আর এই সমস্যার মূলেও কসবা ভুয়ো ভ্যাকসিন (Kasba Fake Vaccine) কাণ্ড। যার কারণে বন্ধ হচ্ছে কাঁথি পুরসভা এলাকার সাতটি ভ্যাকসিন সেন্টার।
ঠিক কী কারণে বন্ধ হল এই টিকাকেন্দ্রগুলি? করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আগে কাঁথি শহরের এতো মানুষকে কীভাবে ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে তা নিয়ে চিন্তা ছিলই। এর মধ্যে নিজেদের পরিকাঠামোর অভাবের কথা স্বীকার করে নিয়ে গত ২৬ ফেব্রুয়ারী শহরের স্বনামধন্য কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে ডেকে পাঠিয়ে এই গুরুদ্বায়িত্ব ভাগ করে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন পুর প্রশসাক সিদ্ধার্থ মাইতি ও স্বাস্থ্য দফতরের নোডাল অফিসার চিকিৎসক অনুতোষ পট্টনায়ক।
সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, স্বাস্থ্য দফতর থেকে পুরসভার জন্য বরাদ্দ ভ্যাকসিন ভাগ করে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং পুরসভার দুটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে গণ টিকাকরণ হবে। তার পর পুর এলাকার সরকারি ও বেসরকারি দশটি কেন্দ্রের মাধ্যমে গড়ে প্রতিদিন ৩ হাজার মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হত। কিন্তু কসবা কাণ্ডের পর আর ঝুঁকি নিতে চায় না প্রশাসন। তাই বন্ধ করে দেওয়া হল সাতটি ভ্যাকসিন সেন্টার।
এখন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলির ৭টি কেন্দ্রে ভ্যাকসিন প্রদান বন্ধ থাকায় গড়ে ২,১০০ মানুষ প্রতিদিন ভ্যাকসিন পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবেন। এই ফারাক কীভাবে মেটানো হবে তা নিয়ে চিন্তায় প্রশাসন। অন্যদিকে যে তিনটি সরকারী কেন্দ্রে ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে স্বাভাবিক ভাবেই সেখানে মানুষের ভীড় বাড়বেই। এই অবস্থায় পুর প্রশাসক সিদ্ধার্থ মাইতির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বেশ কিছু স্থানীয় বাসিন্দা।
প্রসঙ্গত, কাঁথির সাতটি কেন্দ্র থেকে যে টিকা দেওয়া হয় তা আসে কাঁথি পুরসভা থেকেই। আর পুরসভা ভ্যাকসিন পায় নন্দীগ্রাম জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে। ফলে কলকাতার মত কাঁথিতে ভুয়ো ভ্যাকসিন পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে যুক্তি একাংশের। তবুও এক অপরাধীর অপরাধের জন্য সাতটি সংগঠনকে কেন টিকাকরণ করা থেকে বিরত রাখা হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
যদিও সিদ্ধার্থ বাবু সংবাদমাধ্যমকে জানান, জেলা স্বাস্থ্য দফতর এই সাতটি কেন্দ্র বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে। এই কেন্দ্রগুলি দেখভাল করেন নোডাল অফিসার অনুতোষ পট্টনায়ক। তাই তিনিই এই বিষয়ে বলতে পারবেন।
কাঁথির একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্তা সুস্মিত মিশ্র জানান, তাঁদের এসএমএসের মাধ্যমে জেলা স্বাস্থ্যে কর্তা জানিয়েছেন যে সোমবার থেকে ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রক্রিয়া বন্ধ রাখতে হবে। কিন্তু তার জন্য কোনও কারণ দর্শানো হয়নি।
এই বিষয়ে মন্ত্রী অখিল গিরি অবশ্য বলেন, কসবা-কাণ্ডের জেরে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না। এই সেন্টার গুলো ভুয়ো নয়। সঠিক পরিষেবাই দেয় তারা। তাই আবার যাতে শুরু করা যায় তার যেন ব্যবস্থা করার ব্যাপারে তিনি দেখবেন।