পূর্ব মেদিনীপুর: ভবানীপুরে কেন্দ্রে জিততেই হবে। শুক্রবার তৃণমূল নেত্রী (TMC Leader) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamnata Banerjee) নামে নন্দীগ্রামে (Nandigram) নন্দীগ্রামের মন্দিরে মন্দিরে পুজো-আচ্চা শুরু করল তৃণমূল (TMC)।
শুক্রবারই উপনির্বাচনে (Bhawanipur Assembly By-election 2021) ভবানীপুর (Bhawanipur) কেন্দ্রী তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এদিন আলিপুর সার্ভে বিল্ডিংয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন তিনি। তিনি যখন মনোনয়ন দিচ্ছেন, তখন একুশের বিধানসভা ভোটের এপিসেন্টার নন্দীগ্রামে তৃণমূল নেতাকর্মীরা শুরু করলেন পুজো। তৃণমূল নেত্রীর জয়কামনায় জাঁকজমক করে তাঁরা পুজো দেন একের পর এক মন্দিরে।
গত বিধানসভা ভোটে শুভেন্দু অধিকারীর কাছে পরাজিত হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নন্দীগ্রাম বিধানসভায় সকাল থেকেই পুজো-আচ্চা শুরু করেন তৃণমূল সমর্থকরা। নন্দীগ্রামের রেয়াপাড়া শিবমন্দিরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে গলায় ফেস্টুন ঝুলিয়ে সকাল থেকেই পুজোয় বসে থাকতে দেখা যায় তৃণমূল সমর্থকদের। দেবতার কাছে তাঁদের প্রার্থনা, এবার যেন রেকর্ড ভোটে জয়লাভ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবং সেটা হবে বলেও আশাবাদী নন্দীগ্রামের তৃণমূল সমর্থকেরা। তাঁরা শুধু চাইছেন ভগবানের আশীর্বাদ।
উল্লেখ্য, তাঁর একসময়ের সহযোদ্ধা শুভেন্দু যখন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলেন তার কিছুদিনের মধ্যে নন্দীগ্রামের তেখালিতে সভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক শীতের দুপুরে কর্মী সমর্থকদের উচ্ছ্বাসে আপ্লুত হয়ে তৃণমূল নেত্রী ঘোষণা করে দেন, একুশের ভোটে ভবানীপুর নয়, নন্দীগ্রাম থেকে লড়বেন তিনি। তাঁর মুখে এই ঘোষণা শুনে কর্মী-সমর্থকদের উন্মাদনা তীব্র হয়।
সেখানেই সেদিন একুশে ভোটের আগে তৃণমূলের প্রথম প্রার্থীর নাম হিসেবে নিজের নামটাই ঘোষণা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নন্দীগ্রামের তেখালির মাঠ থেকে শুভেন্দু অধিকারী–সহ অধিকরী পরিবারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নিজেই নন্দীগ্রামের আসন থেকে লড়বেন বলে ঘোষণা করে এও বলেন, ভবানীপুরকেও অবজ্ঞা করবেন না। তাঁর কথায়, ‘ভবনীপুরের মানুষকে আমি দুঃখ দেব না।’
বলেন, ‘ভবানীপুর আমার বড় বোন আর নন্দীগ্রাম আমার মেজো বোন। আমি দুটি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে পারলে এবার দাঁড়াব। কারণ, নন্দীগ্রামে থেকেই আমি আন্দোলনটা করব। ভবানীপুরের মানুষ দুঃখ পেতে পারে। আমি দুঃখ দেব না। যদি ম্যানেজ করতে পারি আমি দুটোতেই দাঁড়াব। কিন্তু নন্দীগ্রামে আমি দাঁড়াচ্ছিই।’
যদিও শেষ পর্যন্ত নন্দীগ্রাম থেকেই ভোটে দাঁড়ান মমতা। আর সেই হাইভোল্টেজ ম্যাচে স্বল্প ব্যবধানে তাঁকে পরাজিত হতে হয় শুভেন্দু অধিকারীর কাছে। ফলতঃ মুখ্যমন্ত্রীকে উপনির্বাচন জিততে ফিরে যেতে হয়েছে সেই ‘বড়বোনের’ কাছেই। এবার নেত্রীর ‘ছোটবোন’ নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতাকর্মীদের প্রার্থনা ভবানীপুরে যেন রেকর্ড ভোটে জেতেন তিনি। উল্লেখ্য, বেশ কিছুদিনের আলাপ-আলোচনার পর এদিনই ভবানীপুর কেন্দ্রে বিজেপি তাদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। তিনি প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল। গত বিধানসভা ভোটে এন্টালি কেন্দ্র থেকে হেরে যাওয়া আইনজীবী-বিজেপি নেত্রীকেই মমতার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে বেছেছে তারা।