পূর্ব মেদিনীপুর: নন্দীগ্রামের ভেকুটিয়া থেকে গ্রেফতার ভিলেজ পুলিশ। পঞ্চায়েত ভোট ঘিরে নন্দীগ্রামের ভেকুটিয়া অঞ্চলে অশান্তি ও গোলমালের বিস্তর অভিযোগ উঠেছিল। সেই ঘটনায় কর্তব্যে গাফিলতি-সহ একাধিক অভিযোগ উঠেছিল এই ভিলেজ পুলিশের বিরুদ্ধে। শেষে বুধবার সন্ধে সাতটা নাগাদ গ্রেফতার করা হয় ওই ভিলেজ পুলিশকে। ধৃতের নাম সঞ্জয় গুড়িয়া। বাড়ি নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের ভেকুটিয়া অঞ্চলে। নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। সঞ্জয় গুঁড়িয়া নামে ওই ভিলেজ পুলিশের বিরুদ্ধে মারধর, দলবদ্ধভাবে হামলা, মারধর করে কাউকে গুরুতর জখম করা, ভয় দেখানো এবং খুনের চেষ্টার মতো গুরুতর ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। পুলিশ সূত্রে খবর, তথ্যফাঁসের অভিযোগও উঠেছে ওই ভিলেজ পুলিশের বিরুদ্ধে।
পুলিশ সূত্রে খবর, কলকাতায় ভবানীপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছিল নন্দীগ্রামের গোলমাল নিয়ে। অভিযোগ উঠেছিল বিজেপির ২০ জন নেতা, কর্মী-সহ সঞ্জয় গুড়িয়া নামে ওই ভিলেজ পুলিশ ও তৃণমূলের প্রাক্তন নেতা রাজু গুড়িয়ার বিরুদ্ধে। রাজু ও সঞ্জয় দুই ভাই। ঘটনায় ইতিপূর্বেই বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। ভিলেজ পুলিশের গ্রেফতারি মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত মোট চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। ওই ভিলেজ পুলিশের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৪১, ৩২৩, ৩২৫, ৩২৬, ৩০৭, ৫০৬ ও ৩৪ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, ভেকুটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট ২৫টি আসনের মধ্যে ১৭টিতেই জয়ী হয়েছে বিজেপি। বাকি আটটি গিয়েছে তৃণমূলের দখলে। নন্দীগ্রামের ভেকুটিয়া ও বয়াল অঞ্চলে তৃণমূলের কর্মী ও সমর্থকদের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছিল বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের মধ্যে। গুরুতর আহত অবস্থায় ১৪ জন তৃণমূল কর্মীকে কলকাতায় এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। কিছুদিন আগে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আক্রান্ত দলীয় কর্মীদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন।
বুধবার বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ও এসএসকেএম হাসপাতালে যান আক্রান্তদের দেখতে। আক্রান্ত দলীয় কর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন মমতা। সেই সময়েই এক আক্রান্ত কর্মী মুখ্যমন্ত্রীর কাছে রাজু গুড়িয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান। সেই ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নন্দীগ্রামে গ্রেফতার সঞ্জয় গুড়িয়া নামে এক ভিলেজ পুলিশ। জানা যাচ্ছে, রাজু গুড়িয়াকে গ্রেফতার করতে সেখানে গিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু রাজু তখন বাড়িতে ছিল না। রাজুকে না পেয়ে তার ভাই ভিলেজ পুলিশ সঞ্জয়কে গ্রেফতার করে নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ। আগামিকাল ওই ভিলেজ পুলিশকে হলদিয়া মহকুমা আদালতে পেশ করা হবে।