মারিশদা : আলো, ফুল দিয়ে সাজানো বিয়ের মণ্ডপ। চারদিকে ব্যস্ততা। অনেকে বর আসার জন্য অপেক্ষা করছেন। সানাইয়ের সুর বিয়ের মণ্ডপকে আরও যেন উজ্জ্বল করে তুলেছে। সময় গড়ায়। বর আসছে না দেখে কেউ কেউ খোঁজ নিতে বলেন। তখনই একটা হইচই। বরের বদলে বিয়ের মণ্ডপে ঢুকল পুলিশ। সঙ্গে বিডিও। ঘাবড়ে গেলেন সবাই। জানা গেল, পাত্রীর বয়স মাত্র ১৫। নাবালিকার বিয়ে দেওয়া বেআইনি জানিয়ে বিয়ে বন্ধ করল পুলিশ (Child Marriage)। থেমে গেল সানাইয়ের সুর। পুলিশের আসার খবর পেয়ে মাঝরাস্তা থেকেই পালালেন বর। ঘটনাটি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মারিশদার।
মারিশদা থানার লাউদা গ্রাম পঞ্চায়েতের ধামাই গ্রামের বিষ্ণুপদ ঘোড়াইয়ের কিশোরী মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছিল। পাত্র পাশের গ্রামে টাটকাপুরের বাসিন্দা। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে পাত্রীর বাড়িতে হইচই। রান্না তখন শেষের পথে। পাড়ার অনেকে খেতেও বসেছেন। বর আসার অপেক্ষা করছেন কন্যাযাত্রীরা । পাত্রপক্ষের কেউ কেউ সবে পৌঁছেছেন। কিন্তু, বর আসার আগেই বিয়ের অনুষ্ঠানে হাজির হন মারিশদা থানার ওসি রাজু কুণ্ডু ও বিডিও নেহাল আহমেদ।
নাবালিকা মেয়ের কেন বিয়ে দেওয়া হচ্ছে, পাত্রীর পরিবারকে সেই প্রশ্ন করেন ওসি ও বিডিও । কথা বলার পর বিয়ে বন্ধ করে দেন। সাবালিকা না হওয়া পর্যন্ত কিশোরীর বিয়ে দেওয়া যাবে না বলে বোঝান। অবশেষে পুলিশ আধিকারিকদের কথা মেনে নেয় পাত্রীর পরিবার। তারা জানায়, সাবালিকা না হওয়া পর্যন্ত মেয়ের বিয়ে দেবে না। তাদের কাছ থেকে একথা শোনার পর বিয়েবাড়ি থেকে আসেন ওসি ও বিডিও। এদিকে, বিয়ের আসরে পুলিশ এসেছে শুনে মাঝরাস্তা থেকে গাড়ি ঘুরিয়ে পালিয়ে যান বর ও বরযাত্রীরা।
মারিশদা থানার ওসি রাজু কুণ্ডু বলেন, “নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতির উপরে নজরে রাখা হয়েছে। যদি আবার এমন চেষ্টা হয় তা হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”