তমলুক: ইয়াসের পর বছর অতিক্রান্ত হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আশ্বাসই সার। কাজ করেননি সেচ মন্ত্রী। এই অভিযোগে এবার ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা টায়ার জ্বালিয়ে পথ অবরোধ করলেন। এলাকাবাসীদের বক্তব্য, বৈশাখ জ্যেষ্ঠ মাসে ঝড় ঝঞ্ঝা এবং পূর্ণিমার কোটালে সমুদ্র ও নদীর জলস্তর বাড়ে। জলোচ্ছাস জেরে একাধিক জায়গায় বাঁধের ক্ষতি হয় এবং গার্ড ওয়াল টপকে জল ঢুকে পড়ে গ্রামের মধ্যে। এই বুদ্ধ পূর্ণিমাতেও নদীর জলস্তর বাড়ার ফলে রূপনারায়ণের দুর্বল বাঁধ টপকে জল ঢুকে গিয়েছে গ্রামে। এই পরিস্থিতিতে বাঁধ নির্মাণের দাবিতে তমলুক-কোলাঘাট নদী তীরবর্তী এলাকায় রাস্তা অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুক থানার ধলহরা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ধলহরা ও মথুরী এই দুটি গ্রামের পাশে রয়েছে রূপনারায়ণ নদীর বাঁধ। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের সময় বাঁধ ভেঙে কয়েকশো বাড়ি জলের তলায় ডুবে যায়। এর কিছুদিন পর জল নামলে পরিবারের লোকজনের বাড়ি ফিরে এসেছিলেন। কিন্তু বাঁধ মেরামতি না হওয়ার ফলে প্রতি কোটালে নদীর জল বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আবারও জল ঢুকে যায় এলাকায়। ফলে সমস্যায় পড়েন এলাকার বাসিন্দারা। সরকারি বিভিন্ন দফতরগুলিতে জানিয়েও কোনও ফল না হওয়ায় মঙ্গলবার তমলুক- কোলাঘাট নদীর তীরবর্তী রাস্তা অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পথ অবরোধের জেরে যানজট তৈরি হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় তমলুক থানার পুলিশ। পুলিশকর্মীরা এলাকা পরিদর্শন করেন এবং আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিলে এলাকাবাসীরা পথ অবরোধ তোলেন।
এদিকে মঙ্গলবারের এই পথ অবরোধকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। শাসক দলের রাজ্য যুব সহ সভাপতি পার্থ সারথি মাইতি বলেন, “এই বিক্ষোভ গ্রামের মানুষের নয়। ওদেরকে বিজেপি ভুল বুঝিয়ে কিছু ছেলে মেয়েকে নিয়ে গিয়েছে। বাস্তবে গ্রামের মানুষ নয়, বিজেপিই করিয়েছে এটা । আমাদের মন্ত্রী তথা বিধায়ক সৌমেন কুমার মহাপাত্র সব সময় মানুষের পাশে থাকেন।”
যদিও ঘাসফুল শিবিরের এই অভিযোগ মানতে নারাজ বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সরকার দুর্নীতিগ্রস্ত, তৃণমুলের নেতারা দুর্নীতি পরায়ণ। তাই আমফান থেকে আবাস যোজনা সর্বত্রই গরিব মানুষের টাকা এরা লুঠ করে নিয়েছে। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকাও নয়ছয় করেছে। গ্রামপঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি সহ প্রধান, উপপ্রধান টাকা আত্মসাৎ করেছেন। আর ঝড় বন্যা হলে এই লোকদের অর্থাৎ নেতা-মন্ত্রীদের দেখাও মেলে না। গ্রামবাসীদের বিক্ষোভে আমাদের হাত নেই।”