মহিষাদল: প্রবল বৃষ্টিতে ডুবতে বসেছে আস্ত স্কুল। সামনের মাঠও যেন রাতারাতি বদলে গিয়েছে পুকুরে। বাধ্য হয়ে রাস্তার পাশেই চট পেতে ক্লাস করাচ্ছেন শিক্ষকরা। একদিন আগেই এ ছবি দেখতে পাওয়া গিয়েছিল হুগলির পাণ্ডুয়ায়। এবার যেন একই ছবি মহিষাদলের (Mahishadal) বেতকুণ্ডতে। প্রবল বৃষ্টিতে জলে ডুবেছে গোটা এলাকা। নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভে ফুটছেন এলাকার বাসিন্দারা। এরইমধ্যে দেখা গেল জল পেরিয়ে বহু কষ্টে মায়ের শবদেহ কাঁধে নিয়ে শ্মশানের পথে চলেছেন ছেলে।
মহিষাদল ব্লকের বেতকুণ্ড গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার শুকলালপুরে বাসিন্দা মায়ারানি মণ্ডল (৬৫)। বার্ধক্যজনিত অসুখে বেশ কিছুদিন ধরেই ভুগছিলেন তিনি। এদিকে প্রবল বৃষ্টিতে ডুবেছে এলাকার রাস্তাঘাট। বেড়েছে সাপের উপদ্রপ। যানবাহন পাওয়াও চাপের হয়ে উঠেছে। সে কারণেই মায়ারানি দেবীর চিকিৎসা করাতে গিয়েও বেগ পেতে হয় তাঁর পরিবারের সদস্যদের। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। মৃত্যু হয় তাঁর। কিন্তু, এখন মায়ের শেষকৃত্য করতে গিয়েও বেকায়দায় ছেলে উত্তম মণ্ডল। দেখা গেল কোনও মতে জল পেরিয়ে মায়ের দেহ কাঁধে নিয়ে শ্মশানের পথে চলেছেন তিনি।
এ ছবি ছড়িয়ে পড়তেই জোর শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা এলাকায়। এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। উত্তম মণ্ডল বলছেন, “চিকিৎসার জন্য মাকে হাসপাতাল নিয়ে যেতে এত কষ্ট হয়েছে যে বলার কথা নয়। কোনওরকমে পাঁজাকোলা করে জল পার করে নিয়ে গিয়েছি। তবে মাকে বাঁচানো যায়নি। এখন শেষকৃত্য করতে গিয়েও আমাদের কী অবস্থা হল সবাই দেখছে। শুধু সৎকার নয়, ছোট বাচ্চাদের স্কুলে যাওয়ার সময় গামছা পরে এপার থেকে ওপারে যেতে হয়। সমস্যায় রয়েছে সকলে।” এ খবর চাউর হতে এলাকায় ক্ষোভ জমলেও তাতে প্রশাসনের টনক নড়ে কিনা এখন সেটাই দেখার।